আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে রাণীনগরে বাড়ি ঘেরাও ও দোকানঘরে দুর্বৃত্তদের হামলা

আপডেট: এপ্রিল ১৬, ২০২৪, ৮:৪৩ অপরাহ্ণ


নওগাঁ প্রতিনিধি:


নওগাঁর রাণীনগরের বিলকৃষ্ণপুর বাজারে আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একদল দুর্বৃত্ত একটি দোকান ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। দুর্বৃত্তদের হামলায় ওই দোকানে বসে থাকা উপজেলার পালশা গ্রামের মোশারফ হোসেন (৫৫) এবং দোকানের মালিক রফিকুল ইসলামকে লোহার রড, হাসুয়া ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে তাদের নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে মোশারফ হোসেনের ছেলে মো. আসাদুল ইসলাম বাদি হয়ে ১৭ জনের নামে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। এদিকে উপজেলা তেবাড়িয়া ও পালশা গ্রামের বাসিন্দারা জানান যে যাদের নামে মামলা হয়েছে তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তারা চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত জড়িত আছে। এরা এলাকার মানুষের জন্য চরম আতংক। তাই এদের হাত থেকে এই এলাকার শান্তিকামী মানুষরা রক্ষা পেতে চায়।

আধিপত্য বিস্তার মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের রেদওয়ান ইসলাম, শাহিন হোসেন,আজাদ আলীসহ অন্যদের সাথে মোশারফ হোসেনের নির্বাচন কেন্দ্রীকসহ নানা বিষয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার রাতে মোশরাফ হোসেন বিলকৃষ্ণপুর বাজারে রফিকুল ইসলামের চায়ের দোকানে বসেছিল। এ সময় অর্তকিত ভাবে রেদওয়ান, শাহিন, আজাদসহ আরো কয়েকজন মোশারফের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় তারা রফিকুলের চায়ের দাকানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। এ ঘটনায় আহতদের রক্ষায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা সেখান থেকে দ্রুত চলে যায়।

মোশারফ হোসেনের ছেলে আশাদুল ইসলাম জানায়, গুরুতর আহত তার বাবা মোশারফ হোসেন ও দোকান মালিক রফিকুলকে প্রথমে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আসামীদের অধিকাংশ সর্বহারা দলের সদস্য। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন সব সময় ভয়ভীতিতে থাকেন। সস্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে এদের অনেকের নামে থানায় মামলা রয়েছে।

আধিপত্য বিস্তার আশাদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে তার বাবা ও দোকান মালিক অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এদিকে এই ঘটনার এক দিন পর রোববার রাত ১২টার দিকে একই দুর্বৃত্তরা তেবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলার সিম্বা ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আবু সাইদের বাড়ি ঘেরাও করে এবং লাঠি-সোডা নিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের ধাওয়া করে এবং পরিবারের সদস্যদের গালমন্দ করে। পরে গ্রামবাসীদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যায়।

প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ বলেন, দুর্বৃত্তদের প্রায় সকলেই ঢাকায় থাকে এবং প্রতি ঈদে বাড়ি এসে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের উপর নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। এদের মধ্যে কয়েকজন সর্বহারা দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। আমি এই ঘটনায় সোমবার রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আসামীরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত তাদের কাউকেই আটক করতে পারেনি।

আধিপত্য বিস্তার মামলার তিন নম্বর আসামী আজাদ আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থ এবং ঘটনায় আমি জড়িত নই। তবে অন্যরা কি করেছে তা আমি জানি না। মামলার অন্যান্য আসামীদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা যায়নি।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ মোবাইল ফোনে জানান যে, মামলার প্রেক্ষিতে আসামীদের আটক করার তৎপড়তা অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই আসামীদের আটক করতে সক্ষম হবো।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ