ঈশ্বরদীতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে দিনভর সংঘর্ষে আহত ১৫ II ছেলে আহত হওয়ার খবর জেনে ছাত্রলীগ সভাপতির বাবার মত্যু

আপডেট: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩, ৭:৩১ অপরাহ্ণ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:


পাবনার ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। আলমগীর হোসেন নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ খবর শুনে তার পিতা আকমল হোসেন প্রামানিক (৬৫) আকস্মিকভাবে হার্ট অ্যাটাকে তাৎক্ষনিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে বহিস্কার করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের দরগাপাড়া গ্রামে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে এ সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মুলাডুলি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন এবং একই এলাকার বাসিন্দা মঞ্জু প্রামানিকের ছেলে দাশুড়িয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উভয় গ্রুপের মধ্যে ৪ দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর হোসেন, কাউছারসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। সকালে দাশুড়িয়া কলেজে প্রথমে আলমগীর ও ফাহিমের মধ্যে হাতাহাতি থেকে মারামারি হয়।

দুপুরে রশিদ পেপার মিল এলাকায় তাদের মধ্যে আবারো সংঘর্ষ হয়। এর রেশ ধরে দুপুরে ও বিকেলে দরগাপাড়া এলাকায় আলমগীর ও ফাহিম গ্রুপের মধ্যে আরো দু’দফা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে গুরতর আহত অবস্থায় আলমগীরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে বিকেলে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় ছেলে আলমগীরকে রাজশাহীতে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে শুনে তার পিতা আকমল হোসেন প্রামানিক রাস্তাতেই হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান।

এদিকে এ সংঘর্ষের ঘটনার জন্য ফাহিমকে দায়ী করে তাকে বুধবার রাতেই ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মল্লিক মিলন মাহমুদ তন্ময় ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আরমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে বহিস্কার করা হয়।

ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে জানান, আলমগীর ও ফাহিম দু’জন একই গ্রুপে রাজনীতি করতেন। সম্প্রতি আলমগীর পক্ষ ত্যাগ করে এলাকায় নিজেই প্রভাব বিস্তার করে। এলাকায় নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে এবং পক্ষ ত্যাগ করার প্রতিশোধ নিতে ফাহিম গ্রুপ আলমগীরের ওপর চড়াও হয়ে তাকে মারপিট করে। ওই মারপিটের প্রতিশোধ নিতে আলমগীর গ্রুপ দলবদ্ধ হয়ে ফাহিম ও তার গ্রুপের কয়েকজন নেতাকর্মীকে মারপিট করে। এভাবে বুধবার মুলাডুলিতে দিনভর দফায় দফায় উভয় গ্রুপে মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এসব বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মল্লিক মিলন মাহমুদ তন্ময় বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অপরাধে ফাহিমকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, মুলাডুলির ঘটনায় থানায় কোন পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ