ঈশ্বরদীতে দেড় বছরেও শেষ হয়নি ৯ মুক্তিযোদ্ধার বীর নিবাস নির্মাণের কাজ 

আপডেট: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩, ২:২৩ অপরাহ্ণ


সেলিম সরদার, ঈশ্বরদী (পাবনা) :


কার্যাদেশের ৬ মাসের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের বাড়ি বীর নিবাস নির্মাণ করে হস্তান্তর করার কথা থাকলেও পাবনার ঈশ^রদীতে ৯ বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি দেড় বছরেও। মাস তিনেক বাড়ির কাজ করার পর হঠাৎ করেআি বন্ধ হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের খোঁজ নেই। এ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর পরও তাদের বাড়ির নির্মাণ কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, কোনো বাড়ির গাঁথুনি শেষ হয়েছে প্লাস্টার হয়নি, আবার কোরেনা বাড়ির বাইরের অংশ প্লাস্টার ও রং করার কাজ শেষ হলেও অভ্যন্তরের কাজ শেষ হয়নি। এসব বাড়ির আঙিনায় পয়ঃনিস্কাশনের হাউজগুলো খোলা অবস্থায় আছে। ফলে খোলা হাউজে পড়ে যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দু’একটি বাড়ির কাজ ৯০ ভাগ শেষ হলেও ঘরের ভেতরের পলেস্তারা ও রঙে শ্যাওলা পড়ে গেছে। দরজা-জানালায় মরিচা ধরে গেছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ‘পারিবারিক কারণে’ বাড়িগুলোর কাজ সময়মত শেষ করতে পারেননি বলে মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঈশ^রদীর অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারাও। জানা গেছে, পাকশীর বাঘইলের খালেকুজ্জামান টোকন, গোলাম মাহবুবুর রহমান বাবুল সরদার, যুক্তিতলা গ্রামের মহসিন আলী, দিয়াড় বাঘইলের ওমর আলী, পৌর শহরের প্রয়াত আকাল উদ্দিনসহ ৯জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাসের নির্মাণ শুরু হয় ২০২২ এর জুন মাসে। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। কাজ শুরুর ৬ মাসের মধ্যে এসব বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ শেষ করে তাদের নিকট হস্তান্তর করার কথা। কিন্তু এখনো এসব বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়নি। এই অবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করে হস্তান্তর প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান টোকন বলেন, আমাদের সহযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম, সাইদুল হক বাবুল, হারেজ উদ্দিন হারুসহ আরো বেশ কয়েকজনের বাড়ির নির্মাণ কাজ আমাদের এই ৯ জনের বাড়ির নির্মাণ শুরুর ৬ মাস পর আরম্ভ হয়। তাদের বাড়ি হস্তান্তর পর্যন্ত করা হয়েছে, অথচ আমরা ৯ মুক্তিযোদ্ধা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বীর নিবাস পাওয়ার জন্য দেড় বছর ধরে অপেক্ষা করছি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাহবুবুর রহমান বাবুল সরদার বলেন, জীবনের শেষ সময়ে এসে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি পেয়ে ভেবেছিলাম এ বাড়িতে বসবাস করে শেষ সময়টা কাটিয়ে দেবো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে জীবিত অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এই বাড়িতে উঠতে পারবো বলে মনে হয় না।

ঈশ^রদীর এ সব বীর নিবাস নির্মাণের ঠিকাদার সুজানগরের মো. মন্টু শেখ ফোনে বলেন, প্রথমতঃ এই কাজের রানিং বিল পেতে একটু দেরি হয়েছে। তবে আমার ‘পারিবারিক কিছু সমস্যা’র কারণে ৯টি বীর নিবাস বাড়ির নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। দু’এক সপ্তাহের মধ্যেই কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

ঈশ^রদী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা লিখিত অভিযোগ প্রদানের পর ঠিকাদারকে একবার তাগিদ দেয়া হয়েছে। ঠিকাদার তার নিজস্ব কিছু সমস্যার কারণে বাড়ির নির্মাণ কাজ সময়মত শেষ করতে পারেন নি বলে জানিয়েছেন। তবে আর বিলম্ব্ নয়, এবার দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ