ট্রেনের টিকিট কালোবাজািির চক্র

আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

‘সর্ষেয় ভূত’ নির্মূল করতেই হবে

সংবাদ মাধ্যমের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে ‘সর্ষের মধ্যেই ভূত।’ প্রকৃতঅর্থেই বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এই ভূত লুকিয়ে থাকে। দেশের সেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত করে, উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। ট্রেনের টিকিট নিয়ে বিড়ম্বনা, নানা অভিযোগের মাত্রা কমে না। অনিয়ম দুনীর্তির মধ্য দিয়ে চলতেই থাকে। ভূত ঠিকই তার অবস্থানে থেকে যায়। বাড়ে মানুষের বঞ্চনা আর বিড়ম্বনা। কর্তৃপক্ষ কত যে উদ্যোগ নেন কিন্তু ওই ভূতেরা সে উদ্যোগকে থোড়াই কেয়ার করে! তারা তাদের মত করেই চলতে থাকে।
দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ১৪ জন সক্রিয় সদস্যকে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক হাজার ২৪৪টি আসনের টিকিট, ১৪টি মোবাইল ফোন এবং টিকিট বিক্রির নগদ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
র‌্যাব-এর বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের খবরে উল্লেখ করা হয়, আদতে টিকিট কাটার পুরো প্রক্রিয়া রক্ষণাবেক্ষণে যারা দায়িত্বরত, তারাই জড়িত এই কালোবাজারির সিন্ডিকেটে।
এই চক্রটি বিভিন্ন কারসাজি করে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে স্বাভাবিক সময়ে দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে থাকে। আর ইদের ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটিকে কেন্দ্র করে টিকিটপ্রতি দাম বেড়ে যায় ৩-৪ গুণ পর্যন্ত। বাড়তি এই লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ পায় সরাসরি সিন্ডিকেটে জড়িত সদস্যরা। আর বাকি ৫০ শতাংশ চলে যায় কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আইটি বিশেষজ্ঞদের হাতে। যাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় শুধু দুটি সিন্ডিকেটের হাতেই প্রতিদিন চলে যাচ্ছে প্রায় ৫০০ টিকিট।
র‌্যাব বলেছে, এই কালোবাজারির বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। যারা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত এমন কিছু নামও তারা পেয়েছে। র‌্যাব তাদের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবে। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাউন্টারম্যান, সহজ ডটকমের কর্মচারীসহ বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এমনকি স্টেশনে যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত এমন কয়েকজনেরও এই সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে বলে র‌্যাব জানিয়েছে।
ট্রেনের টিকিটেরে সিন্ডিকেট কতটা সংঘবদ্ধ তা র‌্যাবের দেয়া তথ্য থেকে বোঝা যায়। এমনি করেই কালোবাজারি চক্র ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্টদের যোগসাজসে অবৈধ কাজ করে থাকে। দায়িত্বশীলদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া এমন সিন্ডিকেট গড়ে ওঠা সম্ভব নয়। এখন টিকিট কালোবাজারির সাথে দালাল চক্র এবং তাদেরকে সহায়তা করে যারা সুবিধা হাসিল করে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির উদ্যোগ দেখতে চায় দেশের মানুষ। এ নিশ্চয়তা দিতে হবে যে টিকিট কাটা নিয়ে মানুষের বিড়ম্বনা ও পকেট কাটার অবসান হবে। এর জন্য সর্ষের ভূতটাকে নির্মূল করতেই হবে।