দুর্গোৎসবের সূচনা হল

আপডেট: অক্টোবর ২১, ২০২৩, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

আনন্দ-উদ্দীপনায় সফল হোক

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। মহাষষ্ঠীতে দুর্গা দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে পাঁচদিনের এই উৎসব চলছে। এবার দেবী কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসছেন ঘোড়ায় চড়ে। ফিরবেনও ঘোড়ায় করে। এবারের প্রত্যাশা বসুন্ধরা হবে শস্যপূর্ণ।

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী জেলা ও নগরী মিলে ৪৬৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে জেলায় ৩৮৯টি ও নগরে ৭৯টি। এর আগের তুলনায় এবার দুর্গাপুজার আয়োজনের সংখ্যা বেড়েছে।

দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনিকে তৎপর থাকতে সতর্ক করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপনের লক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনি এবং আয়োজকদের ২৬টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।

দুর্গা পুজা উপলক্ষে এখন রাজশাহী মহানগরী উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। সনাতন ধর্মাম্বলম্বীদের উৎসব হলেও এর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সব শ্রেণিপেশা, ধর্মবর্ণের মানুষের সম্পৃক্ততা আছে। দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করেই নগরীর বাজারগুলোতে বিকিকিনি বেড়েছে। হিন্দু-মুসলমানসহ সব ধর্মের ব্যবসায়ীরা প্রত্যাশাপূরণে ব্যস্ত- তাদের পুজোর ব্যবসায় লাভবান হবেন। এই বেচাকেনাও পুজো-উৎসবেরই একটি অংশ। আবার মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ইদ-পার্বণে বিকিকিনির বৈশিষ্ট্য একই রকম এবং ব্যাপক। অর্থাৎ কেউ কাউকে ইচ্ছে করলেই অগ্রাহ্য করা যায় না। সব উৎসবই সব মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। এই নির্ভরতা, এই প্রত্যাশা-সবই ধর্মীয় সম্প্রীতির অংশ হয়ে আছে। যে বা যারা মানুষের এই সম্মিলনকে অস্বীকার-অগ্রাহ্য করে তারাই মানুষে মানুষে বিভদ সৃষ্টিকারী, তারাই উগ্রবাদী।

সমাজে এই উগ্রবাদীদের অস্তিত্ব আছে। তারা সময় বুঝেই আঘাত হানে, সম্প্রীতি ও শান্তি বিঘ্নিত করতে চায়। মানুষের মিলন রেখায় বিভেদ সৃষ্টি করে জনপদ রক্তাক্ত করতে চায়। এদের সম্পর্কে সকলেরই সতর্ক-সাবধান থাকা উচিৎ হবে। এটা শুধুই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনির কাজ নয়Ñ এ দায়িত্ব সকলেরই। শান্তি- সম্প্রীতির প্রশ্নে সব মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনে অপরিহার্য। সমাজের কোনো অশুভ শক্তিই যেন উৎসবের আয়োজন দুঃখ ভারাক্রান্ত করতে না পারে- সে ব্যাপারে সকলেরই উদ্যাগি ভূমিকা খুবই প্রত্যাশিত। দুর্গার আগমনে অগতির গতি যাতে হয় সেই শপথও নিতে হবে সনাতন ধর্মাম্বলম্বীদের। নিশ্চয় শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ উপায়ে সফলভাবে সম্পন্ন হবে এটাই প্রত্যাশা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি রইল অনেক প্রীতি, অনেক শুভেচ্ছা।