দেশে ৫ লাখের বেশি ফিটনেসহীন গাড়ি

আপডেট: অক্টোবর ২৩, ২০২৩, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

আতঙ্কজনক পরিস্থিতির সমাধান কীভাবে?

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানিয়েছেন সারা দেশে ৫ লাখেরও বেশি মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসহীন গাড়ি আছে।
সম্প্রতি জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
ফিটনেসহীন এসব বাহনের মধ্যে ৩০ শতাংশ রাস্তায় চলে না জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, যেগুলো চলে, সেগুলোর কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে।

অর্থাৎ মাননীয় চেয়ারম্যানের তথ্য অনুযায়ীই দেশে সাড়ে তিন লাখ মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে চলাচল করছে। এটা শুধু উদ্বেগজনক নয় আতংকিত হওয়ার মতই তথ্য। তা হলে এসব গাড়ি সড়কে চলছে কীভাবে? ফিটনেসবিহীন গাড়ি ফিটনেস সনদ কীভাবে পায়, নাকি ফিটনেসবিহীনই সড়কে ছলতে পারে? বিআরটিএ-এর প্রতি যে অভিযোগ বিশেষ ব্যবস্থায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি ফিটনেস সনদ পেয়ে যায়- তা হলে কি এটাই সত্য? নতুবা বিপুল পরিমাণ ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলতে পারতো না। আর যদি চলেই তা হলে সেগুলি অবৈধ উপায়ে চলতে পারছে কীভাবে? রাজধানী ঢাকার অভ্যন্তরীণ রুটে যেসব গাড়ি চলে তার একটা বড় অংশই লক্কর-ঝক্কর মার্কা গাড়ি। ওই গাড়ির চেহারা সুরতই বলে দেয়-গাড়িগুলোকে জোর করে সড়কে চালানো হচ্ছে। আবার সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির জন্য ফিটনেসবিহীন গাড়ি অনেকাংশেই দায়ি।

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে দেশে কম হইচই হয় নাÑ আলোচনা-সমাবেশ বিক্ষোভ. প্রতিবাদ হতেই আছে কিন্তু সমস্যার সমাধান আর হয় না। অর্থাৎ অজ্ঞাত কারণে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। এছাড়াও সড়কের অব্যবস্থাপনা তো আছেই। বহুমুখি সমস্যার মধ্যেই হাবুডুবু খাচ্ছে দেশের পরিবহন সেক্টর।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান আরো উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছেন যে, ওভার স্পিড, দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন অপরাধে ড্রাইভারদের মার্কিঙে ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ করা শুরু হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও বিআরটিএ’র পেশাদার চালকদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে চালকদের চক্ষু, রক্তচাপ ও র‌্যান্ডম ব্লাড সুগার পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, অধিকাংশ চালক উচ্চ রক্তচাপ ও চোখের সমস্যায় ভুগছেন। ফলে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক চালকের চোখের কন্ট্রাক্ট সমস্যাও পাওয়া গেছে।

তবে আশার কথা এই যে, পরিবহন সেক্টরে বিরাজমান সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব সমস্যাকে ধরে ধরে যথাযথ পরিকল্পনা ও কৌশল নিয়ে এগোতে পারলে সুফল পাওয়া যেতে পারে। তবে সমস্যাকে সমাধানের উপায় হিসেবেই দেখতে হবে। কিন্তু তা যদি দায়সারা গোছের কিছু হয় তা হলে সমস্যা যে তিমিরে আছে সেখানেই থাকবেÑ বরং সমস্যা সঙ্কটে রূপ নিবে। মোটের ওপর সড়কের নৈরাজ্য দূর করতে হলে নির্মোহভাবে আইনের প্রয়োগ ও ব্যবস্থা নিতে হবে। দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার আওতায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই আনতে হবে। অন্যথায় নিরাপদ সড়কের প্রত্যাশা অধরাই থেকে যাবে।