নগরীতে হিজবুত তাহরির পোস্টার

আপডেট: অক্টোবর ১৭, ২০২৩, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

নেপথ্যের তৎপরতাও রুখতে হবে

রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল হিজবুত তাহরীর পোস্টার সাটানো হয়েছে। উগ্রবাদী সংগঠনটি তাদের নীতি-আদর্শের লিফলেট বিতরণও করছে- এমনই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সোনার দেশ পত্রিকায়। সংগঠনটি তাদের উগ্রবাদী দর্শনে দীক্ষা দিতে টার্গেট করছে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মেসগুলোকে- যেখানে বিভিন্ন জেলা থেকে পড়তে আসা দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা থাকেন। তাদেরকে জড়িয়ে নেয়া হচ্ছে এ জঙ্গি সংগঠনে। নগরীর শিরোইল, বালিয়াপুকুর, রাণীনগর, কাজলা, তালাইমারী, মোন্নাফের মোড়ে হিজবুত তাহরীর পোস্টার লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে ওই পত্রিকায় উল্লেখ করা হয় রাতের আঁধারে কারা এ পোস্টার মেরে গেছে তা তারা জানেন না।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া অবস্থানের কারণে প্রকাশ্যে আসতে না পেরে নেপথ্যে থেকে হিজবুত তাহরির তাদের সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গোপন যোগাযোগের মাধ্যমে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের যেমন দলে ভিড়াচ্ছে তেমন সংগঠনের প্রচার-প্রচারণায় বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করছে। সংবাদ মাধ্যমের খবর- অনলাইনে একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর। এর আগে ঘোষণা দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সও করে তারা। তবে রাজপথে আন্দোলনের বদলে নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য অনলাইনে সচল রয়েছে তারা। সরকার ২০০৯ সালের অক্টোবরে নিষিদ্ধ করে হিযবুত তাহরীর।

নিষিদ্ধ হলেও সংগঠনটি তাদের তৎপরতা ঠিকই অব্যাহত রেখেছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রায়ই হিজবুত তাহরীর সদস্যদের গ্রেফতারের খবর প্রকাশ হয়। এ বছরের ২৫ জুন ৯ বছর পলাতক থাকার পর হিজবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতা মো. শাকির খান (৪২)কে গ্রেফতার করা হয়। ৪ সেপ্টেম্বর হিযবুত তাহরীর’র শীর্ষ জঙ্গি নেতা আব্দুল বাতেনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ২৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্রকে হিযবুত তাহরীরের সদস্য সন্দেহে গ্রেফতার করে সিটিটিসি ইউনিট। চলতি বছর এমন গ্রেফতারের ঘটনা আরো অনেক আছে।

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দেশে জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স দেখিয়ে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনি জঙ্গিদের মাথা তুলে দাঁড়াতে দিচ্ছে না- এটা যেমন স্বস্তির খবর, তেমনি জঙ্গিদের তৎপরতা উদ্বেগের কারণ। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনি বলছে- জঙ্গিরা নেপথ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম চারিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গিরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনির হাতে ধরাও পড়ছে। এর অর্থ তারা সাংগঠনিক তৎপরতার মধ্যেই আছে, এটাও ঠিক।

জঙ্গি তৎপরতা প্রতিরোধে সরকার দেশের মানুষকেও সম্পৃক্ত করেছে। ফলে এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। তবে জনমানুষকে আরো বেশি করে সম্পৃক্ত করার সুযোগ রয়েছে। মানুষের মধ্যে আস্থার অবস্থান আরো সুদৃঢ় করা গেলে জঙ্গিরা নেপথ্যে তৎপরতার ক্ষেত্রে আরো সংকুচিত হয়ে পড়বে। এ ছাড়াও আইন শৃঙ্খলা সুরক্ষায় আরো সমন্বিত উদ্যোগ এবং তথ্য আদান-প্রদান ও তথ্য যাচাই-বাছাই করার সুযোগ তৈরি করতে হবে। যাতে করে জঙ্গিদের নেপথ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থাও নস্যাৎ করে দেয়া যায়।