প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা

আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নানামাত্রিক টানাপোড়েন ছিল। তিব্র বিরোধিতা ছিল, আন্দোলনের নামে নাশকতা-সন্ত্রাসও ছিল। প্রত্যক্ষভাবে বিদেশি হস্তক্ষেপও ছিল নজিরবিহীন। তদুপরি নির্বাচন সম্পন্ন করা গেছে। এ নির্বাচন দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদের তুলনায় অনেক বেশি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করেছে। সরকার গঠন নিয়েও চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক। তবে সরকারের সামনের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েও বিস্তর আলোচনা হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলো নতুন সরকারও মানছেন। চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনায় সবচেয়ে বেশি যে বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করা হচ্ছে তা হলোÑমূল্যস্ফিতি। মূল্যস্ফিতি নিয়ন্ত্রণ করা নতুন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই ধারণা করা হচ্ছে।

নবনিযুক্ত মন্ত্রীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সতর্ক পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রেসব্রিফিঙে বলেন, রমজানের সময় বিশেষ করে বড় মজুদদাররা যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য জরুরি পণ্য মজুদ করতে না পারে, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন।

মন্ত্রীদের এই বিষয়ে নিয়মিত মজুদ বিরোধী অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখুন, যাতে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে থাকতে পারে। ’
১৪ জানুয়ারি সচিবালয়ে প্রথম অফিসের দিনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন যে, তার প্রথম পদক্ষেপ হবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা। এ সময় নিজের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনার কথা বলেন তিনি।

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বৈশ্বিক পরিস্থিতি কিংবা অন্য যে কোনো কারণেই হোক বিগত সময়ে মূল্যস্ফিতি ক্রমশ বেড়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আয়ের সাথে ব্যয়ের সংকুলান করতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতির উত্তরণ খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। যার ফলে অনেক চ্যালেঞ্জের বিষয় থাকলেও মূল্যস্ফিতিকে অগ্রাধিকার চ্যালেঞ্জ হিসেবেই বিবেচেনা করা হচ্ছে।

আশার কথা হচ্ছে, সংবাদ মাধ্যমের তথ্য মতে, দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসে মুদ্রাস্ফিতি কমেছে- এটা আশাব্যঞ্জক।
তবে কোনো পরিসংখ্যান বিবেচনায় মানুষের দুর্ভোগ ও আয়ের টান কমবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না বাজার পরিস্থিতিকে দক্ষতার সাথে নিরয়ন্ত্রণ করা যায়। নতুন সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশাও তাই- প্রতিশ্রুতির মধ্যেই যাতে বিষয়টি না থাকে। বাজারে সাধারণ মানুষের ক্রয় সক্ষমতা বজায় রাখার ব্যাপারে কোনো আপোস করা যাবে না। নিশ্চিত করেই বলা যায়, এ ক্ষেত্রেই সরকারের সফলতা নির্ভর করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কোনো ধরনের ব্যত্যয় সরকার কিংবা সাধারণ মাুষের জন্য মোটেও ভাল ফল বয়ে আনবে না।