প্রায় ৮ বছর পর রাবির শৃঙ্খলা কমিটির সভা

আপডেট: অক্টোবর ২০, ২০২৩, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

তা হলে শৃঙ্খলা কমিটি কেন?

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের চার নেতাসহ ১১ জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছেন শৃঙ্খলা কমিটি। ওই ১১ শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনকে স্থায়ীভাবে এবং বাকি ১০ জনকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগে কয়েক শিক্ষার্থীর আবাসিকতা বাতিল ও সতর্ক করতে বলা হয়।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে প্রায় ৮ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা কমিটির এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সোনার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
রাবির শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশের বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই সুপারিশে ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শৃঙ্খলা কমিটির সভা হতেই প্রায় ৮ বছর কেটে গেছে। এখন সুপারিশ বাস্তবায়নে কত সময় লাগবে সেটি একটি প্রশ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা সুরক্ষার বিষয়টি যদি অনিশ্চয়তার মধ্যেই চলতে থাকে তা হলে বরং বিশৃঙ্খলাকেই উৎসাহিত করা হয়।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, প্রতি ছয় মাসে অন্তত একবার শৃঙ্খলা কমিটির সভা হওয়ার কথা। কিন্তু গত ১৪ বছরে সভা হয়েছে মাত্র দুটি। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে শৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়েছিল। অর্থাৎ শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠানের যে নিয়ম সেটিকেই উপেক্ষা করা হয়েছে- যা বিশৃঙ্খলারই নামান্তর। শৃঙ্খলা কমিটির সভা নিয়মিত হলে এবং সভার সুপারিশ যথার্থ বাস্তবায়িত হলে অনাকাক্সিক্ষত অনেক ঘটনাই হয়তোবা এড়ানো যেত। কিন্তু সভা নিয়মিত না হওয়ার ফলে অপরাধ প্রবণতা উৎসাহিত হয়েছে বলে ধারণা করা অযৌক্তিক কিছু নয়।

ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মির বেয়াড়াপনা, বেপরোয়া আচরণ এবং অপরাধ প্রবণতার সাথে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। এদেরকে কেউ বা ছাত্রলীগ নামধারী বলে থাকেন। এটা অনেকটাই সমস্যা এড়িয়ে যাওয়ার মত। অপরাধপ্রবণ ছাত্রলীগ কর্মিরা অবশ্যই শক্তিশালী এবং নেতৃত্বদানকারী। অনেক ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে কার্পণ্য করে না।

প্রশাসনের দায়িত্বশীলরাও অনেক সময় অসহায় বোধ করেন। কিন্তু এই দুর্বলতা শুধু ঐতিহ্যের সংগঠন ছাত্রলীগেরই নয়Ñ মাতৃসংগঠন আওয়ামী লীগেরও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। আওয়ামী টানা ১৫ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে যখেষ্ট অবদান রেখে চলেছে দলটি। সেক্ষেত্রে সরকারকেও মাঝেমধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে। বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যায় না। সাধালণ শিক্ষার্থী যারা বিশ্ববিদ্যলয়ে শিক্ষা নিতে এসে ছাত্রলীগ নেতাদের অশোভন আচরণ কিংবা নির্যাতনের মুখে পড়ে তখন সরকারের প্রতি সমর্থন ও আস্থার বিষয়টি ধাক্কা খায়। নিপীড়িত শিক্ষার্থী ও তার পরিবার নিশ্চয় বিষয়টিকে ভালভাবে নিবে না।

এ সব দিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্মি কিংবা যারাই হোক না কেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নিয়মিত শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠান এবং সভার সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন বাঞ্ছনীয়। নিশ্চয় বিশ্বদ্যিালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তৎপর হবেন।