যৌতুকের মোটর সাইকেল না দেয়ায় গৃহবধূকে হত্যা

আপডেট: অক্টোবর ২২, ২০২৩, ১০:২৯ অপরাহ্ণ


ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:


যৌতুকের ফাঁদে বলি হলো সুমাইয়া খাতুন সুরমা (১৯) নামের এক গৃহবধু। যৌতুকের মোটর সাইকেল না দেওয়ায় স্বামী আসিফ আলী তার স্ত্রী সুরমাকে (২৪) পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

গত শনিবার দিবাগত রাতে আসিফের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রোববার (২২ অক্টোবর) সকালে খবর পেয়ে পুলিশ আসিফের ঘরের বারান্দায় শোয়ানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় আসিফ আলীকে প্রধান আসামী করে ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত সুরমার বাবা সুজন আলী। প্রধান আসামী আসিফ নিজেই আদালতে হাজির হলে তাকে জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

নিহত সুরমা ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের অদুরে ডহরশৈলা গ্রামের মো. সুজন আলীর মেয়ে। তার স্বামী আসিফ আলী নাটোরের লালপুরের বৈদ্যনাথপুর গ্রামের মো. হাসেম মন্ডলের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ মার্চ পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের মোটর সাইকেল বাবদ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাবি করে আসছিলো আসিফ। যৌতুকের সেই দাবি পূরণ না করায় প্রায়শই সুরমাকে শারিরিক নির্যাতন করতো আসিফ। এরই এক পর্যায়ে কয়েক দিন আগে প্রথম দফায় তাকে পিটিয়ে শারিরিক নির্যাতন করে স্বামী আসিফ। একই দাবিতে গত শনিবার দিবাগত রাতে ফের পেটানোর এক পর্যায়ে গলাটিপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে শনিবার দিবাগত রোববার ভোর ৪টা ৩০ মিনিটের সময় আসিফের মা আঁখি বেগম সুজন আলীকে ফোন করে আপনার মেয়ে অসুস্থ। আপনারা আসেন। আসিফের বাড়িতে গিয়ে তারা দেখতে পান বারান্দায় সুরমার মৃতদেহ শুইয়ে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

এদিকে সুরমাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানো ও হত্যা মামলা দায়ের করার পর মামলা তুলে নিতে আসামী আসিফের পরিবার থেকে নানাভাবে হুমকি ধামকি ও আপোষ করার জন্য চাপ দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত সুরমার বাবা সুজন আলী।

তিনি বলেন, আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে শারিরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমি আপোষ চাই না। আমার মেয়ের হত্যাকান্ডের বিচার চাই। আসামী আসিফের বাবা হাসেম মন্ডল এ ব্যাপারে মুঠোফোনে বলেন, আমার ছেলে ও তার স্ত্রীর মধ্যে সাংসারিক ও দাম্পত কলহে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না? তা আমি বলতে পারবো না।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তাইবুর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। আসামীও কারাগারে আছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ