রাজশাহীতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উদ্যোক্তাদের নিয়ে সিজিএস-এর আঞ্চলিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৪, ১০:২৪ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহীতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উদ্যোক্তাদের নিয়ে সিজিএস-এর আঞ্চলিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) নগরীর রয়্যাল রাজ হোটেল এবং কনডমিনিয়ামে রাজশাহী ও রংপুরের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উদ্যোক্তারা কোভিড-১৯ মহামারীর সময় তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ড. মো. মাহবুব সিদ্দিকী এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধি আকবারুল হাসান মিল্লাত আলোচনায় অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।

সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ (সিআইপিই)- এর সহযোগিতায় এ আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনার মূল বিষয় ছিল কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে এই অঞ্চলে অভিযোজিত কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে তারা কীভাবে এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা দেশব্যাপী অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে এবং ভবিষ্যতের সংকটের জন্য আরও ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে বিভিন্ন অংশীজনদের কীভাবে একসাথে কাজ করতে পারে সে সম্পর্কে মূল সুপারিশগুলি তুলে ধরেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

আলোচনার শুরুতে উদ্যোক্তারা তাদের করোনাকালীন সময় প্রধান চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে নিজ নিজ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সরকার পর্যায়ে প্রণোদনা প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে আসে, যার মধ্যে প্রণোদনা সম্পর্কে উদ্যোক্তাদের অজ্ঞতা এবং সরকার থেকে এই ব্যপারে যথেষ্ট প্রচারণার অভাব পরিলিক্ষিত হয়। সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের তথ্য সকল ক্ষতিগ্রস্থ উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে এই প্যাকেজে যে পরিমাণ দূর্নীতি হয়েছে তা অকল্পনীয়। প্রণোদনার টাকা পেতে তাদের ১০%/১৫%/২০% টাকার কমিশনও দিতে হয়েছে। এই প্রণোদনা কি তাহলে শুধু মাত্র গুটিকয়েক ব্যবসায়ীদের জন্য ছিলো কিনা, এই নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। তবে কিছু উদ্যোক্তারা বিসিক থেকে প্রণোদনা প্যাকেজ পেয়েছে এবং এজন্যই ব্যবসা পুনরায় পরিচালনা করার কথা বলেছেন।

কোভিড এর কারণে অনেকের ব্যবসা-শোরুম বন্ধ হয়ে যায়। বাসা থেকে অনলাইনে কাজ ক্রতে বাধ্য হন। কিন্তু অনলাইনে বাবসা করার অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে আর্থিকভাবে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কথা বলেছেন উদ্যোক্তারা। মহামারীর সময় দূর্নীতি অনেক বেশি হয়েছে। স্থানীয় সরকার এবং কোন এনজিও থেকে সাহায্য না পেয়ে সবাই তাদের নিজস্ব সঞ্চয় দিয়ে চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এছাড়াও আলোচনা সভায় ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তির অসুবিধার কথাও উঠে এসেছে। ব্যাংক ঋণ গ্রহণের অন্যতম মুল অসুবিধা হলো জামিন্দার হিসেবে সরকারি কর্মকর্তা থাকার আবশ্যকতা যা সকল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সম্ভব নয়।

এসকল সমস্যার সমাধান হিসেবে অনেক সুপারিশও আলোচনার মাধ্যমে উঠে আসে। ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যাবসায়ীদের ক্ষেত্রে পরামর্শ হিসেবে বলা হয় যাতে ব্যবসায়ের কিছু মূলধন বা সঞ্চয় আলাদা করে রাখা হয়। যাতে করে ভবিষ্যতের সংকটে তা ব্যবহার করে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়। কোন প্যাটফর্ম নেই এবন এই ক্ষেত্রে সোস্যাল মিডিয়া তাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে।
উদ্যোগে ট্রেইনিং ও গাইডলাইন

নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। উপরন্তু গণমাধ্যমকে ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পের ব্যবসায়ীদের পাশে দাড়াতে হবে, বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের সাথে যাতে করে নতুন ব্যবসাগুলো সম্প্রসারণ হতে পারে।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) বাংলাদেশ ভিত্তিক একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক যা সুশাসন, দুর্নীতি, মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের বিষয়ে গবেষণা ও মিডিয়া স্টাডি পরিচালনা করে। দ্রুত পরিবর্তনশীল জাতীয় ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হলো শিক্ষাগত সম্প্রদায়, সরকার, বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ এবং উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে শাসনের মান উন্নত করা, বাংলাদেশের নিরাপত্তার চাহিদা পূরণ করা, দারিদ্র্য নিরসনের জন্য উপলব্ধ সম্পদের দক্ষ ও বিচক্ষণ ব্যবহার করার শর্ত তৈরি করা, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও বর্ধিত গণতন্ত্রীকরণ, অংশগ্রহণ এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক শৃঙ্খলার স্থিতিশীলতা।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ