রাণীনগরে গ্রামীণ সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যান ট্রাক্টর

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪, ৪:৩৮ অপরাহ্ণ


আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি: জেলার রাণীনগর উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোয় দেদারছে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে যান ট্রাক্টর। এরফলে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক আর ঘটছে নানান দুর্ঘটনা। ট্রাক্টর মূলত জমিতে চাষাবাদ এবং প্রধান সড়কে পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

ফেব্রুয়ারি মাস মাটি খননের মৌসুম হওয়ায় বিভিন্ন গ্রামে পুকুর খননের পর মাটি বহনে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রাক্টর। ফলে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা ও সড়ক। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ সড়কগুলোয় শত শত এই যান দাপিয়ে বেড়ালেও নজর নেই প্রশাসনের।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিনিয়তই প্রশাসনের অসাধু কর্মচারিদের ম্যানেজ করে কোনো না কোনো গ্রামে চলছে নতুন ও পুরাতন পুকুন খননের কাজ। খননের মাটি বহন করা হচ্ছে ৬-৮ চাকার ট্রাক্টর-ট্রলি দিয়ে। আর দিন-রাত ট্রাক্টরের চলাচলে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ জনপদের জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো। এছাড়া ইট বিছানো ও পাঁকা সড়কের উপর পড়ে থাকা মাটির আস্তরণে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনায় কেউ মৃত্যুবরণ করছে আবার কেউ স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করছে।

নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে প্রতিটি ট্রাককে মাটি পরিবহণে ৩-৪শো টাকা করে প্রদান করা হয়। ফলে এতো কম টাকায় মাটি বহনের সুবিধা পাওয়ায় খননকারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাড়া করে আনে ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক। স্থানীয় বাসিন্দারা যখন অভিযোগ দেয় তখন লোক দেখানো দু’একটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পুকুর খননে ব্যবহৃত ভেকু মেশিন এবং খননকারীর বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড প্রদান করা হলেও আইনের ধরাছোঁয়ার বাহিরেই থেকে যাচ্ছে এসব অবৈধ যান।

উপজেলার গোনা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল জানান অনেকেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নির্দিষ্ট লোকদের সঙ্গে আঁতাত করে নিজেদের ইচ্ছে মাফিক ফসলি জমি মাটি দিয়ে পূরণ করছেন। অপরিকল্পিত ভাবে কৃষি জমি পূরণ করায় পানি চলাচলের পথ নষ্ট হওয়ায় পাশের জমিগুলো চাষের যোগ্যতা হারিয়ে ফেলছে।

কতিপয় লোকের প্রতি প্রশাসনের এমন স্বজনপ্রীতির কারণে আমরা স্থায়ী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। আর নষ্ট হওয়া সড়ক দিয়ে আমাদেরকেই বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। এমন অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ করতে দ্রুতই সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার ক্ষমতা পুলিশের নেই। তাই উপজেলা প্রশাসন যখন আমাদের ডাকে তখন ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে গিয়ে আমরা মাঝে মধ্যে ভেকু মেশিন ও ট্রাকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করে থাকি। যদি এমন অভিযান নিয়মিত করা যেতো তাহলে হয়তোবা এমন অবৈধ কর্মকান্ডের কিছুটা লাগাম টানা সম্ভব হতো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম মুঠোফোনে জানান, খবর পেলে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এমন অভিযান আগামীতেও অব্যাহত রাখা হবে বলেও তিনি জানান।