শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রবণতা

আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

সমাধানে পরিবারের ভূমিকা সর্বাগ্রে

দেশে শিক্ষার্থী আত্মহত্যা উদ্বেগজনক। আর আত্মহত্যায় মেয়ে শিক্ষার্থীরা বেশ এগিয়ে আছে। সমীক্ষা বলছে এ বছর আত্মহত্যার সংখ্যা সামান্য কম হলেও তা মোটেও আশানুরূপ নয়।
সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ইউনিট কৃত সমীক্ষার
তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে সারা দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৫১৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। এ সংক্রান্ত তথ্য দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে।
ওই সমীক্ষার তথ্যে বলা হয়েছে, সবথেকে বেশি আত্মহত্যা করেছে নারী শিক্ষার্থীরা, ৬০ দশমিক ২ শতাংশ। আর শিক্ষার স্তর বিবেচনায় আত্মহত্যা বেশি স্কুলগামীদের, ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ। গত বছর আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলে ২০৪ জন, নারী ৩০৯ জন। ২০২২ সালে আত্মহত্যা করেন ৫৩২ জন। এ বছর কমেছে মাত্র ২০ জন।

আঁচল ফাউন্ডেশন বলেছে, বয়ঃসন্ধিকালে নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এ সময়টাতে বেশি রাগ-অভিমানের প্রবণতাও থাকে। গেল বছরের চিত্রে দেখা যায়, ১৩-১৯ বছর বয়সী ৩৪১ শিক্ষার্থী (৬৬.৫%) আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ২২২ জনই মেয়ে; বিপরীতে ছেলে ১১৯ জন।
২০-২৫ বছর বয়সীদের আত্মহত্যার হার ২৩.৪%, ২৬-৩০ বছর বয়সী ২.৩%, আর এক-দুই বছর বয়সী শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার হার ৭.৮%।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিশোর বয়সে হরমোনজনিত কারণে শিক্ষার্থীরা বেশি আবেগপ্রবণ থাকে। ফলে তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও বেশি থাকে।

আত্মহত্যা কমাতে ১০টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা; মেন্টর নির্ধারণ; শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেন্টাল হেলথ কর্নার চালু করা; শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করাসহ ১০ টি সুপারিশের ওপর গুরুত্বরোপ করা হয়েছে। সঙ্গত কারণে সুপারিশগুলোর বাস্তবায়নের উদ্যোগ সময়ের দাবি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

আত্মহত্যা প্রবণতার সাথে আবেগীয় কারণটি খুবই সঙ্গত এবং এটি একটি জটিল বিষয়। এর মনস্তাত্বিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে পরিবারে চর্চা থাকা খুবই বাঞ্ছনীয়। সাধারণত পরিবারের রক্ষণশীল অবস্থায় সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেয়া প্রবণতাই বেশি লক্ষনীয়- যা সমস্যা প্রকট করে তোলে। পরিবারের সম্পর্ক অতি গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের সহজ বোধের আদান প্রদান সব সদস্যকে সহজ করে তোলে, পরস্পরের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যেতে পারে যেখানে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের দুরত্বও কমিমে আনা যায়। শিক্ষকের রক্ষণশীল ও আরোপিত আচরণ শিক্ষার্থীর ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। সমস্যাটাকে সমন্বিত উপায়ে সমাধানের পথ অন্বেষণ করতে হবে।