ঈশ্বরদীতে প্রশাসনের নামে কোটি টাকার চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

আপডেট: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩, ১:১৬ অপরাহ্ণ

ঈশ্বরদী(পাবনা) প্রতিনিধি :


বিজয় দিবস পালন করতে এবং প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করার নামে ঈশ^রদীর অর্ধশতাধিক ইটভাটা থেকে প্রায় কোটি টাকার চাঁদা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযোগকারী ইটভাটার মালিকরা তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই অভিযোগ করেছেন।

চাঁদা আদায়কারী ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয় হোসেন উল্টো এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে তার কিছু হবে না বলে দম্ভোক্তি করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বিষয়ে কিছুই জানে ন না বলে মন্তব্য করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নে রয়েছে ৫২টি ইট ভাটা। এর মধ্যে হাতেগোনা দু’একটি ভাটার লাইসেন্স থাকলেও বাকিগুলোর লাইসেন্স নেই। ৭-১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব ভাটা মালিকদের নিকট থেকে বিজয় দিবস উপলক্ষে ওই চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ইট ভাটার প্রকারভেদে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়েছে।

চাঁদা আদায়ের আগে ভাটা মালিকদের বলা হয়, ভাটা চালাতে হলে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করতে হয় এবং বিজয় দিবসের আয়োজনের খরচ হিসেবে উপজেলা প্রশাসনকে চাঁদা দিতে হবে।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আসা এক ভাটা মালিক এসব তথ্য জানান। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ভাটা মালিকদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব টাকা উত্তোলন করা হয়। মুঠোফোনে আরো কয়েক ভাটা মালিকও নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

তারা বলেন, কোনো ভাটামালিক চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হলে সেই ইট ভাটায় ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে জরিমানা করানো হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। ভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয় হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিটি ইটভাটা থেকে এই চাঁদা উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভাটা মালিকরা।

এ ব্যাপারে জয় হোসেন বলেন, সমিতি চালাতে হলে যেমন টাকা লাগে, তেমনি লাইসেন্স ছাড়া ভাটা চালাতে হলে সবকিছু ঠিকঠাক করেই ভাটা চালাতে হয়। তিনি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য মোবাইল ফোনে অনুরোধও করেন। পাবনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হক বলেন, অনেকেই প্রশাসনকে ম্যানেজের নামে টাকা উত্তোলন করেন।

টাকা উত্তোলন করে তো লাভ নেই, অবৈধ ইটভাটা গুলোতে অভিযান চালানো হয়েছে, আগামীতে আরো হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে গতমাসে ৩ টি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৭ টি ইট ভাটাকে ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ঈশ^রদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ শনিবার সন্ধ্যায় বলেন,ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করার কথা বলে ইট ভাটার মালিকদের নিকট থেকে চাঁদা উঠানো হয়েছে বলে শুনছি, কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের সাফ জবাব, কোনো ভাটা থেকে আমরা কোন চাঁদা নেইনি। এক সপ্তাহের মধ্যেই আমরা অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করবো।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ