ঈশ্বরদীতে শ্রমিক সংকটে ধুঁকছে শতাধিক টেইলার্স

আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২৪, ৫:৫৭ অপরাহ্ণ


সেলিম সরদার, ঈশ্বরদী (পাবনা) :


পাবনার ঈশ্বরদীতে শ্রমিক সংকটের কারনে স্থানীয় টেইলার্সগুলোয় ইদ উপলক্ষে পোশাক তৈরির অর্ডার নেওয়া এখনই প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা। ফলে এবার ইদে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের বেশিরভাগ মানুষ কাপড় কিনে অল্প খরচে টেইলার্স থেকে পোশাক তৈরি করাতে পারছেন না। অর্থকষ্ট থাকলেও ইদের কেনাকাটায় তাদের ছুটতে হবে তৈরি পোশাকের দোকানে।

ঈশ্বরদী বাজার, পাকশী বাজার, আওতাপাড়া হাট-বাজার ও দাশুড়িয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে গত দুই বছরে টেইলার্স শ্রমিক সংকটের কারণে এই উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১শো টেইলার্স বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো চালু থাকা শতাধিক টেইলার্সও ধুঁকছে শ্রমিক সংকটে।

ঈশ্বরদী বাজারের ডিসেন্ট টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন খান আল-আমিন জানান, ২ বছর আগেও শুধুমাত্র ঈশ্বরদী বাজারে লেডিস ও জেন্টস মিলিয়ে টেইলার্সের সংখ্যা ছিল প্রায় ৭০টি। শহরের বাইরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মার্কেট ও বিপনি বিতানে ছিল আরো শতাধিক টেইলার্স। একে একে বন্ধ হতে হতে শহরের বাজারে এখন ৩৫ থেকে ৪০টি টেইলার্স কোনোমতে টিকে আছে। আর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ হয়ে গেছে অর্ধেক টেইলার্স। তিনি জানান, এক বছর আগেও প্রতিটি টেইলার্সে কমবেশি ১০-১২ জন শ্রমিক কাজ করতো।

এখন এসব টেইলার্সে ৩ থেকে ৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। টেইলার্স শ্রমিক সোহাগ হোসেন জানান, একটি শার্ট সেলাই করে ১৫০ টাকা ও একটি প্যান্ট সেলাই করে তারা পান ২৫০ টাকা। একজন শ্রমিক দিনে ৪ থেকে ৫টা শার্ট অথবা ৩টি প্যান্ট সেলাই করতে পারেন। সে হিসেবে তারা প্রতিদিন ৫-৬শ’ টাকা মজুরি পান। অথচ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প কিংবা ঈশ্বরদী ইপিজেডে কাজ করলে এসব শ্রমিকরা মাসে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বেতন পান। এ কারণে টেইলার্সের দোকানে কাজ করা শ্রমিকরা এই পেশা ছেড়ে রূপপুর প্রকল্প ও ইপিজেডে কাজ করার দিকে মনোযোগী হয়ে পড়েছেন।

আওতাপাড়া বাজারের প্রবীণ টেইলার্স শ্রমিক জামাল উদ্দিন বলেন, পুরনো দর্জি যেমন এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন তেমনি নতুন কেউ এ পেশায় আর আসছেন না। এ কারণে টেইলার্স গুলো দর্জি সংকটে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ঈশ্বরদী বাজারের রয়েল টেইলার্সের মালিক রবিউল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদীতে বছর দুয়েক আগেও ৩ শতাধিক টেইলার্স শ্রমিক কাজ করতো কমতে কমতে অর্ধেকে নেমে এসেছে। নতুন কোনো শ্রমিক এই পেশায় আর আসছেন না। নতুন শ্রমিক সৃষ্টি না হওয়া আর পুরনো শ্রমিকরা পেশা বদলে অন্য পেশায় চলে যাওয়ায় টেইলার্স ব্যবসায় চরম সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ