ব্রহ্মাণ্ড চালাচ্ছে ‘ঈশ্বর কণা’ই, পাঁচ দশক আগে সৃষ্টিরহস্য ফাঁস করেন হিগসই

আপডেট: এপ্রিল ১০, ২০২৪, ৮:৩৬ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক:৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত ‘ঈশ্বর কণা’র আবিষ্কারক পিটার হিগস। ভারতীয় সময় মঙ্গলবার রাতে ছড়িয়ে পড়ে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীর মৃত্যুসংবাদ। আর সেই সঙ্গেই নতুন করে বিজ্ঞানী মহলে ফিরে এসেছে ‘ঈশ্বর কণা’ তথা হিগস বোসন কণার প্রসঙ্গ। যে কণার আবিষ্কার মহাবিশ্বের রহস্য সমাধানে এক অসামান্য উদ্ভাবন। কিন্তু একে ‘ঈশ্বর কণা’ বলা হয় কেন? যার সাথে জুড়ে রয়েছেন বিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বোস।

১৯৬৪ সালে তিনি প্রথম বলেন এমন এক কণার কথা, যার নাম দেয়া হয়েছিল হিগস-বোসন কণা। যা পদার্থকে ভর জোগায়। তবে তখনও পর্যন্ত তার হাতে-কলমে কোনো প্রমাণ ছিল না। যা ছিল তা কেবলই তত্ত্ব। প্রায় পাঁচ দশক পরে ২০১২ সালে জেনেভার ‘ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চে লার্জ হেড্রোন কলাইডার যন্ত্রের পরীক্ষা ‘ঈশ্বর কণা’র উপস্থিতি প্রমাণিত করে। যুগান্তকারী এই থিয়োরির জন্য ২০১৩ সালে পদার্থবিদ্যায় যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান হিগস।

ঠিক কী এই ‘ঈশ্বর কণা’? ব্রহ্মাণ্ডের সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে কণা। কিন্তু বিগ ব্যাঙের সময় তাদের কোনো ভর ছিল না। তারা প্রত্যেকে আলোর গতিবেগে ছড়িয়ে পড়েছিল। আমরা যা কিছু প্রত্যক্ষ করি, গ্রহ, নক্ষত্র, জীবন- সব, সব কিছু সৃষ্টি হয়েছিল কণা ভরপ্রাপ্ত হওয়ার পরে। আর তা তারা প্রাপ্ত হয়েছিল এক বিশেষ ক্ষেত্র থেকে। যে ক্ষেত্রের নাম হিগস বোসন ক্ষেত্র। কণাটির নাম হিগস বোসন কণা। এই কণার ভর ১২৫ বিলিয়ন ইলেকট্রন ভোল্ট। যা প্রোটন কণার চেয়ে ১৩০ গুণ বড়। যা প্রথম জানিয়েছিল সার্নই।

কেন এই কণাকে ‘ঈশ্বর কণা’ বলা হয়? এর পিছনে রয়েছে একটি মজার ঘটনা। এই কণাকে নিয়ে নোবেলজয়ী পদার্থবিদ লিওন ল্যাডারম্যানের লেখা একটি বইয়ে ‘গডড্যাম পার্টিকল’ শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল। আসলে এই কণার প্রত্যক্ষ প্রমাণ তখনও পর্যন্ত মেলে নি। মেজন্য বিরক্ত হয়েই এমন একটা উচ্চারণ তিনি করেছিলেন। কিন্তু বই’র প্রকাশক নামটি বদলে ‘গড পার্টিকল’ করে দেন।

স্বাভাবিক ভাবেই এর সাথে একটা ধর্মীয় সম্পর্কও তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষের মনে এমন একটা ধারণা তৈরি হতে থাকে যেন, এই কণার সঙ্গে ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ জুড়ে রয়েছে। কিন্তু আসলে এর সঙ্গে সেই বিষয়ের কোনো যোগই নেই। এই কণাই হিগস বোসন কণা। এক বঙ্গতনয়ের দেখানও পথেয় যে কণাকে খুঁজে পেয়েছিলেন ব্রিটিশ-বিজ্ঞানী।
তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন অনলাইন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ