রাবির সেন্টার ফর কালচারাল স্টাডিজের আয়োজনে মুজিব নগর দিবস উদ্যাপন

আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ণ


সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :


‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও বঙ্গবন্ধুর প্রথম সরকার’ শিরোনামে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের ১২১নং কক্ষ এ.আর.মল্লিক হলে ‘ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস’ পালন উপলক্ষে সেন্টার ফর কালচারাল স্টাডিজের আয়োজনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার সন্ধ্যায় (১৭ এপ্রিল) আয়োজিত সেন্টার ফর কালচারাল স্টাডিজের সভাপতি প্রফেসর ড. মোর্বারা সিদ্দিকার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল খালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা প্রফেসর এস.এম. এক্রাম উল্যাহ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। কিন্তু লেখক ও গবেষক তাদের লেখায় বঙ্গবন্ধুর প্রথম সরকার নিয়ে জটিল বিতর্ক তৈরি করার প্রয়াস চালিয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে প্রচ্ছন্ন রাখার প্রয়াস পেয়েছেন। কিন্তু ইতিহাসের সত্য নিজেই উদ্ভাসিত হয়।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট নারীনেত্রী অধ্যাপিকা রাশেদা খালেক, রাবির প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী সভাপতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. সুলতান মাহমুদ রানা প্রমুখ। মুজিবনগর সরকারের প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে যথেষ্ট বিচক্ষণতা ও ধৈর্য্যরে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন।

ঐতিহাসিক কারণে তাজউদ্দীন আহমদের কৃতিত্ব অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই। মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ এর ১০ এপ্রিল গঠিত বাংলাদেশ সরকার ছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সরকার। এটি ছিল রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির সরকার এবং সেই মোতাবেক এটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার।

বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাঁর ঘনিষ্ট সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বিচক্ষণতায় মুক্তিযুদ্ধ একটি জনযুদ্ধে পরিণত হয়। খোন্দকার মোশতাকের অন্তর্ঘাত মূলক কর্মকাণ্ড সত্বেও তাদের বিচক্ষণতা ও ধৈর্য্যরে কারণে সরকার সফলতা অর্জন করে।

যুদ্ধ পরিচালনার জন্য অস্ত্র ও অর্থের সংস্থান ও বিশ^ব্যাপী কূটনৈতিক কার্যক্রমে এই সরকার সফলতা অর্জন করে এবং এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় অর্জিত হয় এবং এই সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন এবং বাংলাদেশের বিজয় পূর্ণতা পায়।

প্রফেসর এস.এম. এক্রাম উল্যাহ বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ধারণার বহু পূর্বে-অনানুষ্ঠানিকভাবে তৈরী হচ্ছিল, বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন, তবে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে ২৬ সে মার্চ ১৯৭১ সালে। শরৎবসু, কিরণ শঙ্কর, সুভাষবসু, আবুল হাশিম সকলেই স্বপ্ন দেখেন কিন্তু স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে সমর্থ হয়েছিলেন একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ‘ৎয়বাংলা’ কথাটা আমাদের জন্য ব্রহ্ম শব্দ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি প্রফেসর আবদুল খালেক বলেন, আগে দেশকে ভালবাসতে হবে। দেশকে ভালোবাসলে মুজিবনগর দিবস পালন করতে হবে, জয়বাংলা শব্দ উচ্চারণ করতে হবে। যে দেশকে ভালোবাসে, সেই বড় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। আজকের দিনেরতাৎপর্য হলো, পৃথিবীর প্রায় ২০০টি রাষ্ট্র স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে, কিন্তু দেশ স্বাধীন করতে পেরেছে খুব কম সংখ্যক।

কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ পেরেছে, বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন তার অনুপস্থিতিতেই তার নামেই যুদ্ধ করে মুজিবনগর সরকারের পরিচালনায় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মো. রওশন জাহিদ।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ