খাদ্যপণ্য: মূল্যস্ফীতি রোধ সময়ের দাবি কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে

আপডেট: মার্চ ১, ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ

খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ কতটা বেড়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি বিশ^ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে এখনো ১৮ শতাংশ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, যা গত অক্টোবরে ছিল ২১ শতাংশ। দেশে এখনো খাদ্যবহির্ভূত পণ্যেও চেয়ে খাদ্যপণ্যের দাম বেশি হারে বাড়ছে। এ কারণে খাদ্যবহির্ভূত খাতের চেয়ে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হারও বেশি বাড়ছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে এখনো মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে। বিশ^ব্যাংকের হিসাবে গত ডিসেম্বরে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশের বেশি। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে এ হার ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের খুচরা বাজারে মোটা চালের দাম এখন করোনা-উত্তর স্তরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি। সংস্থাটির আগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দেশে মোটা চালের দাম বিশে^র মধ্যে সর্বোচ্চ। যদিও আলোচ্য সময় মজুরি (কৃষি মজুরিসহ) বেড়েছে, তবে এখনো খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির চেয়ে মজুরি বাড়ার হার কম। বস্তুত বাজারভেদে মোটা চালের দামে ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। দাম বৃদ্ধির কারণে গরিব মানুষের কষ্ট বেড়ে যায়।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ফুড প্ল্যানিং ও মনিটরিং ইউনিটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে খাদ্য উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে খাদ্য-পণ্যের মজুত। ফলে সরবরাহও বেড়েছে। পরিস্থিতি হল- কোনো খাদ্যপণ্যের উৎপাদন বাড়লেও বাজারে এর প্রভাব খুব একটা পড়ে না। এমনকি ফসল কাটার মৌসুমেও ধান-চালের বাজারে অস্থিরতা লক্ষ করা যায়। সিন্ডিকেটের কারণেই এমনটি হচ্ছে। কাজেই সিন্ডিকেটের কারসাজি বন্ধ করতে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি। একই সঙ্গে মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্যও বন্ধ করতে হবে।

দেশে কোনো পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা বাস্তবায়ন করা যায় না। এক্ষেত্রে তদরকি ও ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার মনোভব রহস্যজনক। মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকালে কেন সংশ্লিষ্ট পণ্যের সংকট তীব্র আকার ধারণ করে, সে রহস্যও উদঘাটন যেমন জরুরি, তেমনি এক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপও কাম্য। সরষের ভেতরের ভূত তাড়ানোর পদক্ষেপ না নিলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে না। আর এক্ষেত্রে সরকারকে আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে।