তাপপ্রবাহ প্রলম্বিত হচ্ছেই!

আপডেট: এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

অভিভাবকগণ শিশুদের প্রতি দায়িত্বশীল হোন


বাংলাদেশের ইতিহাসের দীর্ঘতম তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যেটি ৩১ মার্চ শুরু হয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলছিল। কখনো কখনো তাপপ্রবাহ অতি তীব্র আকার নিচ্ছে। তাপদাহের এই ব্যাপ্তি আগে কখনো দেখা যায়নি। দেশজুড়ে তীব্র দাবদহে দুই দফায় টানা ছয় দিনের সতর্কবার্তার পর নতুন করে ২৫ এপ্রিল আরো তিন দিনের সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অর্থাৎ তাপদাহ প্রলম্বিত হচ্ছেই

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, জনজীবন দহনজ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রাণিকূলেরও কোনো নিন্তার নেই। ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে হিটস্ট্রোকে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষ জীবন-জীবিকা নিয়ে টানাপোড়নের মধ্যে আছে। সারা দেশে বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়েছে। ইসতেসকার নামাজ আদায়ের সাথে সাথে ব্যাঙের বিয়ের মত বিশ্বাসগুলো পালিত হচ্ছে। সকলেরই আকাঙক্ষা একপশলা বৃষ্টি হয়ে শুষ্ক মাটি ভিজে উঠুক, প্রকৃতিতে স্বস্তির হাওয়া বয়ে যাক।

তীব্র তাপদহনে দেশের শিশুরা উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে, জানিয়েছে ইউনিসেফ। বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েটের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। ইউনিসেফ, বাংলাদেশজুড়ে দুঃসহ তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। সারা দেশে এই অসহনীয় তামপাত্রায় শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইউনিসেফের ২০২১ সালের শিশুদের জন্য জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) অনুযায়ী, বাংলাদেশে শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে। অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে। বিশেষ করে নবজাতক, সদ্যজাত ও অল্পবয়সী শিশুদের জন্য। হিটস্ট্রোক ও পানিশূন্যতাজনিত ডায়রিয়া এবং উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাবে সৃষ্ট অসুস্থতায় এই বয়সী শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

শিশুদের ওপর তাপমাত্রা বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সারা দেশে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। এই পরিস্থিতিতে ইউনিসেফ বাবা-মায়েদের প্রতি তাদের সন্তানদের পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা ও নিরাপদ রাখার জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে বিবৃতিতে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ সংবাদমাধ্যমগুলোতে তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে শিশুদের জন্য পরামর্শ-প্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। পরামর্শ অনুযায়ী শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া সময়েরই দাবি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভিভাবকরাই শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখবে সেটাই স্বাভবিক। এর ব্যত্যয় যাতে না সে দিকে অভিভাবকদের তাদের শিশুদের প্রতি অধিক যত্নশীল হবেন সেটাই এই মুহূর্তে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।