নিয়ামতপুরে নবান্ন উৎসবকে ঘিরে গ্রামীণ যাত্রাপালা

আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২৩, ৮:০৪ অপরাহ্ণ


নিয়ামতপুর(নওগাঁ) প্রতিনিধি:


নওগাঁর নিয়ামতপুরে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান কাটতে শুরু করে কৃষক। নতুন ধান ঘরে তুলতেই শুরু হয় নবান্ন উৎসব। নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। মিশে আছে হাজার বছরের ইতিহাস ও নানা অনুষঙ্গ।

মূলত, উপজেলা সদরের বালাহৈর, টিকরামপুর, ধর্মপুর, অর্জুনপুর গ্রামে আমন ধান ওঠানোর পর আয়োজন করা হয় নবান্ন উৎসব। নবান্ন উৎসবের মূল আকর্ষণ থাকে গ্রামীণ যাত্রাপালা। যাত্রাপালা দেখার জন্য আত্মীয়স্বজনেরা বেড়াতে আসেন। সন্ধ্যার পর যাত্রাপালা দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন লোকজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের অর্জুনপুর গ্রামে ১লা অগ্রহায়ণে (১৮ নভেম্বর) আয়োজন করে লক্ষীপূজা ও গ্রামীণ যাত্রাপালার। গ্রাম একটি হলেও একই গ্রামে রয়েছে আলাদা তিনটি লক্ষী মন্দির ও আলাদা তিনটি স্টেজে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামীণ যাত্রাপালা।

নবান্ন উৎসবকে ঘিরে সন্ধ্যার পর থেকেই দোকানি হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। যেন মেলায় পরিণত হয় চারপাশ। নিজের বসার জায়গা পাকাপোক্ত করার জন্য গ্রামের পুরুষ ও নারীরা খেজুর পাতার পাটি, বস্তা বিছিয়ে রাখেন।

প্রতিবেদকের কথা হয় অর্জুনপুর গ্রামের দিলীপ দাসের সাথে। তিনি বলেন, যাত্রাপালায় অংশগ্রহণের জন্য গ্রামের তরুণেরা বেশ আগ্রহী। কয়েক দিন মহড়ায় অংশগ্রহণ করে নিজেদের তৈরি করে নেন। যাত্রাপালার বাদ্য-বাজনা বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সবাই এক জায়গায় জমায়েত হন। গভীর রাত ধরে চলে যাত্রাপালা। আলাদা আলাদা পূজা ও যাত্রাপালা কেন অনুষ্ঠিত হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এমনটা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। আমরাও পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রেখেছি।

যাত্রাপালা দেখতে আসা হরিনাথ নামের এক দর্শনার্থী জানান, আগের মতো আর গ্রামীণ যাত্রাপালা দেখতে পাওয়া যায় না। অর্জুনপুরে আয়োজন করে বলে দেখতে এসেছি। এক স্টেজ থেকে আরেক স্টেজে গিয়ে যেটি ভালো লাগছে সেখানেই বসে দেখেছি।

গ্রামের মন্ডল মিলন কুমার দাস, নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ১লা অগ্রহায়ণ মাসে এ উৎসব পালিত হয়ে আসছে। যুগ যুগ ধরে এই গ্রামে তিনটি মন্ডপ থাকায় আলাদা করে তিনটি স্টেজে গ্রামীণ যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয়। মূলত নবান্ন উপলক্ষে লক্ষীপূজা আয়োজন করে গ্রামবাসী।

তিনিআরও বলেন, নবান্ন উৎসবের মতো যাত্রাপালাও হারিয়ে যেতে বসেছে। সংস্কৃতি পাল্টে যাওয়ার কারণে এখন আর আগের মতো নবান্ন উৎসব দেখা যায় না।