স্কুল শিক্ষিকার আয়োজনে নবান্ন উৎসব পালিত

আপডেট: ডিসেম্বর ১, ২০২৩, ৯:২১ অপরাহ্ণ


গোমস্তাপুর প্রতিনিধি:


গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে উত্তর রহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মমতাজ বেগমের আয়োজনে পালিত হলো নবান্ন উৎসব।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দিনব্যাপি নবান্ন উৎসব পালিত হয়। প্রতিবছরের ন্যয় রহনপুর পৌর এলাকার পুণর্ভবা নদীর তীরে ঘেঁষা বাবুরঘোন মহল্লায় ওই শিক্ষিকার নিজ বাড়িতে চলে এই উৎসব।

এতে পুরো এলাকায় নবান্ন উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। লাল-হলুদ শাড়ি, কাঁচা ফুলের মালা পরে শিক্ষার্থীসহ এলাকার নারী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা আসেন। নারী-পুরুষরা মেতে উঠে সারাদিন পিঠা তৈরি ও নাচে-গানে। গ্রাম-বাংলার ঢেঁকি ও যাঁতার শব্দে পরিবেশটাই যেন একটি অন্যরকম মাত্রা যোগ করে। গীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে নতুন ধান থেকে ঢেঁকি ছাঁটা, চাল যাঁতায় পিসে তৈরি করা আটা দিয়ে হরেক রকমের পিঠা-পুলি খেতে আসে উৎসুক জনতাও। পিঠা খেতে আসা উৎসুক অতিথিদের গ্রাম-বাংলার সংগীত গেয়ে আনন্দ দেয় শিক্ষার্থীরা। গ্রামের এ ঐতিহ্যকে উৎসাহ যোগাতে ছুটে এসেছিল রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, কবি ও স্থানীয় সাংবাদিকরাও।

ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র শিয়াম বাবু বলেন, উৎসবের কথা সকালে শুনেই বাবাকে নিয়ে দেখতে এসেছি। আমি কখনো এসব দেখি নি। এবার এগুলো দেখে ভালো লাগল। গীত, তিলের পিঠা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান খুবই ভালো লেগেছে। তার অন্যরকম আনন্দ অনুভূতি লেগেছে।

রহনপুর জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক হাবিব সাত্তার বলেন, এই উৎসবে অংশ নিতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন মমতাজ বেগম। তার এই আয়োজনে উৎসাহ দিতে সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কবি তরিকুল ইসলাম বলেন, মমতাজ বেগমের ডাকে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এসেছেন। পুরানো ঐতিহ্য নতুনদের সামনে তুলে ধরছেন ওই শিক্ষিকা। নানা শ্রেণির নারীদের নিয়ে এই আয়োজনটি ছিল সুন্দর।

শিক্ষিকা মমতাজ বেগম জানান, তার নানা-নানীরা বহুযুগ ধরে বিভিন্ন ধরনের পিঠা-পুলি বানিয়ে গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীদের দাওয়াত করে খাওয়াতেন। সেই থেকেই প্রতিবছর গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী ও মহল্লার নারীদের নিয়ে এ উৎসবটি পালন করে আসছেন তিনি। তার এই নবান্ন উৎসব দেখতে যান চাঁপাইনবাবগঞ্জ- ২ আসনের সংসদ সদস্য ও আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী জিয়াউর রহমান, রহমান পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান খান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ইমদাদুল হক মামুন, লেখক ও কবি শামসুল হক টুকু, অজিত কুমার দাসসহ অন্যরা। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন খেলাধুলা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।