রাণীনগরে যত্রতত্র ড্রেন নির্মাণে ক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা, পানি চলাচলের খাল উদ্ধারের দাবি

আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪, ১২:১৫ অপরাহ্ণ


আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি:


নওগাঁর রাণীনগরে দখল হয়ে যাওয়া খাল উদ্ধার না করে পানি নিষ্কাশনের জন্য যেখানে সেখানে ড্রেন নির্মাণে ক্ষুদ্ধ স্থানীয় অধিবাসীরা। উপজেলার ত্রিমোহনী হাটে অপরিকল্পিত পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিতব্য ড্রেনে তেমন একটা সুফল না পাওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বরং ড্রেনের পাশ দিয়ে অবৈধ দখলে থাকা খালটি উদ্ধার করে পুনঃখনন করার দাবি এলাকাবাসীর।

উপজেলার চককুতুব গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা মোকশেদ আলী মণ্ডল বলেন, ছোট যমুনা নদী থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে একটি খাল ত্রিমোহনী বাজার থেকে কুবরাতলী মোড় হয়ে মন্ডলের ব্রিজ সংলগ্ন খালের সঙ্গে যুক্ত ছিলো। যে খাল দিয়ে খুব সহজেই পানি চলাচল করতো। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৫-৭৬ সালেও এই খালে জমে থাকা পানি দিয়ে শত শত হেক্টর জমিতে সেচ দিয়ে চাষাবাদ করা হয়েছে।

এছাড়া এ অঞ্চলের বাড়িতে ও হাটে ব্যবহৃত পরিত্যক্ত পানি সেই খাল দিয়ে ছোট যমুনা নদীতে খুব সহজেই চলে যেতো। কিন্তু পরবর্তি সময়ে যে যার মতো করে খালটি দখল করে মাটি দিয়ে ভরাট করে নেয়ার কারণে খালটি অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের সহজ পথ বন্ধ হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হচ্ছে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার।

বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী ত্রিমোহনী হাটসহ আশেপাশের অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের উপযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। ফলে বছরের পর বছর হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, নকশায় থাকা খালটি পুনরায় উদ্ধার করা হলে এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের জন্য চৌদ্দমুল্লক ঘুরে অপরিকল্পিত ভাবে দায়সারা ড্রেন নির্মাণ করার প্রয়োজন হতো না।

বর্তমানে ত্রিমোহনী স্কুলের উত্তর দিকে থেকে হাটের পাশ দিয়ে দীর্ঘপথ ঘুরে পানি নিষ্কাশনের জন্য যে সরু ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে সেই ড্রেন দিয়ে শুষ্ক মৌসুমেই পানি চলাচল করা কঠিন হয়ে যাবে। এছাড়া এই পানি সরাসরি কৃষকের জমিতে পড়ার কারণে চাষাবাদ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এছাড়া খাল উদ্ধার না করেও যদি স্কুলের পাশ দিয়ে সোজা ছোট যমুনা নদী (প্রায় ১ শত মিটার দৈর্ঘ্য) পর্যন্ত একটি বড় আকারের ড্রেন নির্মাণ গেলে খুব সহজেই পানি নিষ্কাশন হতো। তাহলে স্থানীয়রা অনেক উপকৃত হতো। গ্রামীণ পর্যায়ে যদি সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প-গুলো ভবিষ্যতের কথা ভেবে সঠিক পরিক-ল্পনার মাধ্যমে মান-সম্মত ভাবে বাস্তবায়ন করা হলে খুব কম সময়ের মধ্যেই শহরের সকল সুবিধা গ্রামে গ্রামে পৌছে যেতো।

কাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বাবু মোবাইল ফোনে জানান, ত্রিমোহনী হাট থেকে সরকার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও বছরের পর বছর সংস্কার না করায় হাটের যাবতীয় অবকাঠামো দিন দিন চাহিদা হারিয়ে ফেলছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে হাটুরে ও ক্রেতাদের বৃষ্টিতে ভিজে হাটে কেনাকাটা করতে হয়। বর্তমানে হাটের পানি নিষ্কাশনের জন্য যে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে তা সময় ও চাহিদার সঙ্গে যথোপযুক্ত নয়।

খণ্ড খণ্ড ড্রেন নির্মাণ না করে সরাসরি নদী বরাবর একটি বড় আকারের ড্রেন নির্মাণ করা হলে তা হাটসহ অত্র অঞ্চলের জন্য খুবই ভালো হতো।
উপজেলা প্রকৌশলী ইসমাইল হোসেন বলেন, ত্রিমোহনীতে পরিকল্পনা মাফিক ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। আর যেহেতু সরকারি খাল আমাদের আওতার বাইরে সেহেতু সেটি উদ্ধারের দায়িত্ব আমাদের নয়। তবে ছোট যমুনা নদী পর্যন্ত একটি বড় আকারের ড্রেন নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ