সরকার গঠনে সসস্যা কাটছে না

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

অনিশ্চয়তার মুখে পাকিস্তান

পাকিস্তানের রাজনৈতিক সঙ্কট কোন্ দিকে মোড় নিচ্ছে, তা নিয়ে বেশ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে দেশটি। চলতি ফেব্রুয়ারি ৮ তারিখে দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তার ফলাফল ঘোষণা করতেই তিন দিন চলে গেছে। নির্বাচনে কোনো দলই সরকার গঠন করার মত আসন পায়নি। ফলে কোয়ালিশন সরকার গঠনের তোড়জোড় চলছে। জোট সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) মিলে কোয়ালিশনের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়।

কিন্তু সেখানেও তারা এখন পর্যন্ত সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়নি। অন্যদিকে কারাবন্দি ইমরান খানের দল পিটিআই দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারেনি। এমনকী দলীয় প্রতীকও ব্যবহার করা যায় না। পিটিআই-এর সব নেতারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এবং সর্বোচ্চ ৯২ আসন লাভ করে। কিন্তু কোনো দলীয় প্লাটফরম না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সংবিধান অনুযায়ী সরকার গঠন করতে পারবে না। তাদেরকে কোনো দলের সাথে একীভুত হয়ে সরকার গঠন করতে হবে। কিস্তু রাজনৈতিক নানা ব্যস্তবতার কারণে সেটাও সম্ভব হবে না।

পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র ও অপরিনাম রাজনীতি ধারা থেকে ৭৭ বছরেও দেশটি উঠে আসতে পারেনি। সবসমই ধর্মকে ব্যবহার করে দেশটিকে পশ্চাদপদ করে রাখা হয়েছে। বারবার সামরিক স্বৈরাচারের যাতাকলে পড়ে দেশটি এখন ভঙ্গুরতার পর্যায়ে চলে এসেছে। এমনকী ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ সৃষ্টি হলেও কোনো শিখন গ্রহণ করেনি। বরং সেনাবাহিনি পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে দেশটি শাসন করে চলেছে। দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোকে সেনাবাহিনির সমর্থন নিয়েই সরকার গঠন করতে হয়। কোনো ব্যত্যয় হলে সরকার থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। ফলে ৭৭ বছরের ইতিহাসে দেশটিতে কোনো দলই ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি। ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দেশটির সেনাবাহিনি নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণ করে নিজেরাই সেই কৌশলের ফাঁদে পড়ে গেছে। সেই ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খঁজে পাচ্ছে না।

ইমরান খানের দল পিটিআই বা দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে হিসাবই করে নি সেনাবাহিনি। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি পুরো নির্বাচন ইমরান খান দ্বারাই প্রভাবিত হয়েছে। এবং সেই কারণে নির্বাচনি ফলাফল নির্ধারণে কারচুপি করতে হয়েছে। সেই কারণেই তিনদিন ধরে ফলাফল বন্ধ রাখতে হয়েছিল। কিন্তু তারপরও সেনাবাহিনি লক্ষ্য অনুযায়ী কোয়ালিশন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়েছে। মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)এর মধ্যে সমঝোতা হয়েও সমঝোতা ঝুলে আছে। শেষ পর্যন্ত ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকার গঠনের বাধ্যবাধকতা আছে। শেষ পর্যন্ত দুই দলের সমঝোতায় কোয়ালিশন সরকার গঠন করা সম্ভব হলেও পাকিস্তানের সঙ্কট আরো বাড়বে বোই কমবে নাÑ এটা বেশ সহজেই অনুমেয়।