৮ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল

আপডেট: এপ্রিল ২২, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

এরা কি দায়মুক্তি পেয়ে যাবে?
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রায় আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করেছে। কিন্তু যারা বাদ পড়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি। বাতিল এই মুক্তিযোদ্ধারা প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সনদ এবং এরা সরকারের ভাতাও তুলেছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও মিথ্যে তথ্য দিয়ে সনদ নেয়ার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে কী না? একই সাথে তারা যে সরকারি ভাতা এ পর্যন্ত নিয়েছে তা ফেরৎ নেয়ার উদ্যোগ হবে কি?

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক-চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ চৌধুরী বিবিসিকে বলেন মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও যারা ভুয়া তথ্য দিয়ে এ তালিকায় এসে বেনিফিট নিয়েছে তারা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে ও এদের কাছ হতে ভাতার টাকা সরকারের ফিরিয়ে আনা উচিত। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, যারা ভাতা পেতেন সেটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে এই বিষয়ে মামলা করলে হাজার হাজার লোকের বিরুদ্ধে করতে হবে। ‘আমরা মন্ত্রণালয় চালাবো নাকি আদালতের বারান্দায় বারান্দায় দৌঁড়াবো।’

তবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বা জামুকার সদস্য মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) ওয়াকার হাসান বলছেন এ বিষয়ে কাউন্সিলের মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এ টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে।

প্রসঙ্গত, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন, সনদ দেয়া বা ভুয়া সনদ বাতিলের জন্য এ প্রতিষ্ঠানটিই সরকারকে সুপারিশের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত, যার নেতৃত্বে আছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী নিজেই।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৮৩ হাজারের সামান্য বেশি। তবে এর মধ্যে এখন বেঁচে আছেন প্রায় এক লাখ।

বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ শোনা গেছে। এমনকি বাংলাদেশে ভুয়া বা অ-মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ঠিক কত, সে বিষয়ে এখনও পরিষ্কার তথ্য নেই মন্ত্রণালয়ের কাছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, বাদপড়া ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা আইনের আওতায় আসছে না। অথচ বাতিল মুক্তিযোদ্ধারা যদি প্রতারণা ও মিথ্যে সনদ দাখিলের জন্য দায়ি হোন তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেয়াটাও সমীচীন হবে না। বাতিলরা যে অন্যায় পন্থা অবলম্বন করেছে তা শুধু সরকারের সাথেই নয়; দেশের মানুষের সাথেও প্রতারণা করেছে। দেশের মানুষকে ধোকা দিয়েছে। অন্যায় করে দায়মুক্তির সংস্কৃতি অপরাধ প্রবণতাকে উৎসাহিতই করবে। অন্তত ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা যে পরিমাণ ভাতা উত্তোলন করেছে তা সরকারি কোষাগারে ফেরৎ নিতে হবে।