এবারের ইদযাত্রা

আপডেট: এপ্রিল ১৬, ২০২৪, ১২:১৫ পূর্বাহ্ণ

অনেকটাই স্বস্তির ছিল
এবারের ইদ যাত্রা অনেকটাই স্বস্তির হয়েছে। কচিৎ কোথাও ভোগান্তির কারণ হলেও সামগ্রিক বিবেচনায় ইদযাত্রায় দুর্ভোগ তেমন ছিল না।
অন্যবারের মতো ট্রেনের টিকিট কাটা নিয়ে তেমন অভিযোগ ছিল না। এই প্রথমবারের মত ট্রেনের টিকিট সম্পূর্ণ অনলাইন মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে। অনলাইন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় বলতে যা বোঝায় এবারে তেমনটি হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে দু’একটি রুটে ট্রেনের শিডিউলে সামান্য হেরফের হলেও সেটাও ছিল সাময়িক। ট্রেনের টিকিট নিয়ে দালালদের দৌরাত্ম্যের ঘটনাও এবার সামনে আসেনি।

সড়কপথেও তেমন দুর্ভোগ ছিল না। বেশ কিছু সড়ক নতুন করে চালু হওয়ায় যাত্রাপথ অনেকটাই সহজ হয়। দু’একটি রুটে সাময়িক জানজট হয়েছে বটে তবে তা মারাত্মক কিছু হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের খবর সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। বেশি ভাড়া নেয়াকে কেন্দ্র করে চালক ও চালক সহকারীর সাথে যাত্রীদের বিতর্কের জেরে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীদের এলোপাতাড়ি মারপিটের পরিণতিতে চালক ও চালকের সহকারীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনা মর্মান্তিক ও অনাকাক্সিক্ষত। পরিবহন মালিক মালিক ও শ্রমিকদের এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে। যাত্রীদের ওপর অতিরিক্ত ভাড়া আরোপ করার বিষয়টি স্বেচ্ছাচারিতা কী না সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ।

তবে সড়ক দুর্ঘটনার মত অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার বাড়বাড়ন্তু এবারও ছিল। অনেক প্রাণ ঝরে গেছে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়, তদন্ত হয়- অনেক সুপারিশ হয় কিন্তু সুপারিশের বাস্তবায়ন হয় না। ফলে সড়কের অব্যবস্থাও দূর হয় না। সড়কে দুর্ঘটনায় বেপরোয়া মোটর সাইকেল চলাচলকে অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু সমাধানে এ ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো উদ্যোগ নেই। অনলাইন পোর্টাল বাংলা ইনসাইডারের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১০ এপ্রিল দিনগত রাত ১২ টা থেকে ইদের দিন ১১ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় ১৭২ টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮২ জনকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে দিনজনের মৃত্যু হয়। সারা দেশের প্রেক্ষাপটেও মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু খুবই উদ্বেগজনক।

সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল আচরণ ও সতর্কতার নজির রাখতে পারলে বিভিন্ দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার অনেক কমিয়ে আনা যায়। কিন্তু বিবেচনার তোয়াক্কা করতে চাই না কেউ। ফলে পরিস্থিতিরও কোনো পরিবর্তন হয় না। এটা অনেকটাই দুর্ঘটনাকে নিয়তির ওপর ছেড়ে দেয়ার সামিল। এটা যে ব্যর্থতা তা কেহই স্বীকার করতে চান না। ব্যর্থতা স্বীকার করাটাও পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটায়। দায়িত্ববোধের জাগরণ ঘটায়।