কর্মই ধর্ম! নির্বাচনের আগে শিল্পীর কোলাজে সম্প্রীতির বার্তা

আপডেট: এপ্রিল ১৫, ২০২৪, ২:৪০ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


নির্বাচনি মাঠে নেমেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। ভোট চাইছেন সাধারণ ভোটারদের কাছে। এদিকে তাঁদের কাছেও বহু প্রত্যাশায় প্রত্যাশী ভোটাররা। তবে এই গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আশা-আকাক্সক্ষা, চাওয়া পাওয়া প্রতিশ্রুতি ইত্যাদি। তবে কোথাও সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। নেই জাতি ধর্মের ভেদাভেদ। একমাত্র ধর্ম, মানব ধর্ম অর্থাৎ কর্মই মূল ধর্ম। লোকসভা নির্বাচনের আগে শিল্পী তপন সাহার কোলাজে ফুটে উঠলো সেই বার্তা।

যে কোনো নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একাধিক প্রার্থী লড়াই করেন। প্রচারে বেরিয়ে তারা সাধারণ ভোটারদের নানান প্রতিশ্রুতি দেন। সেক্ষেত্রে ভোটাররাও তাঁদের প্রত্যাশার কথা জানান। জিতলে সব করে দেয়ার কথাও বলেন প্রার্থীরা। তবুও মানুষ তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার করে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন।

পরবর্তীকালে ভোটারদের নজরে থাকে, প্রার্থী জিতে আসার পর ৫ বছর কী কী কাজ করলেন অথবা দেয়া প্রতিশ্রুতির কতটা পূরণ করলেন। তবে এই পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে কোথাও জাতি ধর্মের কোনো সম্পর্ক থাকে না। প্রার্থীর দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সঙ্গে সম্পর্ক থাকে না জাত ধর্ম বা কোনো ব্যক্তি ভোটারের ব্যক্তিগত প্রত্যাশার। ভোটাররা কিন্তু তাঁদের কর্মের মাধ্যমেই দিন যাপন করার পাশাপাশি সার্বিক উন্নয়ন বাস্তবায়নের জন্য সেই কর্মই করে থাকেন।

হুগলির ব্যান্ডেলের কোলাজ শিল্পী তপন সাহা কোনো রকম রঙ ছাড়া রঙিন ছবি তৈরি করে থাকেন। খবরের ছেঁড়া কাগজ কোলাজ করে করেন নানান ছবি। আসন্ন গণতন্ত্রের উৎসবকে কেন্দ্র করে তাঁর কোলাজেও ফুটে উঠেছে সেই ভাবনা। তারকা সমৃদ্ধ হুগলি লোকসভা কেন্দ্র। তিন প্রধান প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের রচনা ব্যানার্জি, বিজেপির লকেট চ্যাটার্জি ও সিপিআইএম-এর বেশ পরিচিত মুখ মনোদীপ ঘোষ।

এই তিন প্রার্থীকে নিয়ে কোলাজ করেছেন শিল্পী। যেখানে তিনি রেখেছেন হংসেশ্বরী মন্দির, ব্যান্ডেল চার্চ এবং ইমামবাড়াকে। ছবিতে রয়েছে তিন প্রার্থীর হাসি মুখ। ছবির ঠিক নীচে হাত পেতে বসে এক অশীতিপর বৃদ্ধা। এই ছবির মাধ্যমে শিল্পী বোঝাতে চেয়েছেন কর্মই ধর্ম। অর্থাৎ সার্বিক স্বার্থে প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করা। একইসঙ্গে মানুষের কাজ করাই মূল ধর্ম। সেই ধর্ম পালিত হলে যে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি জিতুক না কেন তাকে আগলে রাখবে সাধারণ মানুষ।

টানা ৭দিন ধরে টুকরো টুকরো কাগজ জুড়ে চারকোল ব্যবহার করে এক কথায় অনবদ্য কোলাজ তৈরি করেছেন শিল্পী। কিন্তু ভোটের বাজারে হঠাৎ শিল্পীর এমন ভাবনার কারন কী? তপন সাহা বলেন, সারা বছরই নানা ধরনের ছবি তিনি তৈরি করেন। বর্তমান সময়ে গণতন্ত্রের শ্রেষ্ঠ উৎসব উপলক্ষেও ছবি তৈরি করেছেন।

তিনি মনে করেন, আসলে তাঁদের মতো শিল্পীরা তাঁদের কাজের মাধ্যমে বরাবরই সমাজকে কিছু একটা বার্তা দেয়ার চেষ্টা করে থাকেন। এখানে তিনি সেটাই করেছেন। সত্যি তো প্রার্থীরা প্রচারে বেরিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। বিনিময়ে সাধারণ মানুষ কী পাবে। তাঁদের নূন্যতম চাহিদা খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান। আর সেই সামান্য চাহিদাগুলি পূরণ হলে মানুষ আর কী চায়?

জাতিধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি তাঁর ছবির মাধ্যমে গরিব প্রান্তিক মানুষের কথা বলতে চেয়েছেন। তাঁদের জন্য সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা রয়েছে ঠিকই, তবু কোথাও সেই মানুষগুলির চাহিদা থেকেই গেছে।
তথ্যসূত্র: আজকাল অনলাইন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ