জাতীয় সংসদকে উচ্চ আদালতের পরামর্শ

আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

‘কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬’ সময়েরই দাবি
কৃষি জমি সুরক্ষায় করা খসড়া আইন দ্রুত পাস করতে জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়ে ঘোষিত হাই কোর্টের রায় প্রকাশ হয়েছে।
রায়ে একই সঙ্গে একটি দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করে দ্বীপ উন্নয়ন আইন প্রণয়নেরও পরামর্শ দেয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ১৫ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।

রায়ের অনুলিপি দেশের সব মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের কাছে পাঠানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নওগাঁর মো. মিজানুর রহমানকে পুকুর খনন বন্ধ করতে ভূমি অফিসের দেয়া নোটিশ অবৈধ ঘোষণা করে এ রায় দেয়া হয়। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সোনার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

রায়ে উল্লেখ করা হয়, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৪ পর্যালোচনায় এটি পরিষ্কার যে বিপণন তথা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান থেকে মাটি বা বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু স্বীকৃত মতেই আলোচ্য মোকদ্দমায় দরখাস্তকারী বিপণন বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো মাটি উত্তোলন করছেন না।

এতে বলা হয়েছে, ‘ফসলি জমিতে পুকুর খননের বিধি-নিষেধ আরোপ করে কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬ এর খসড়া প্রণয়ন করা হলেও কোনও এক অজানা কারণে এটি এখনও আলোর মুখ দেখছে না।’
তাই ‘কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬’ দ্রুত জাতীয় সংসদে পাস করাতে পরামর্শ দেয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে রায়ে সংবিধানের ৪২ (১) অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ মোতাবেক সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কেবলমাত্র সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইন দ্বারা নাগরিকের উপরোল্লিখিত সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তনে বিধি নিষেধ আরোপ করা তথা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’

উচ্চ আদালতের রায়ে এটা পরিষ্কার যে, কৃষি জমি সুরক্ষায় আইনের স্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে। আইনের ফাঁক-ফোকরের মধ্য দিয়ে এর ব্যত্যয় ঘটছে। সেটা ভূ-বৈচিত্র্যকে হুমকির সম্মুখিন করছে এবং খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। পরিস্থিতি ক্রমশ গভীর হচ্ছে। এতে জমির ধরন পাল্টে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যাচ্ছে বটে কিন্তু ভবিষ্যত অনিশ্চয়তাও সৃষ্টি করছে। অবৈধ পুকুর খননের ফলে অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে এবং এর ফলে সামাজিক সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এটা রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতারও পরিপন্থি। সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলোকে সম্যক বিবেচনায় নিয়ে ‘কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬’ জাতীয় সংসদে দ্রুত পাস হওয়া বাঞ্ছনীয়। দেশের জীববৈচিত্রের সুরক্ষা-সংরক্ষণ করা সময়েরই দাবি। টেকসই উন্নয়নের সাথে আইনের বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।