বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বিশ্ব মানবতার সমর্থনে শপথের দিন

আপডেট: এপ্রিল ১৪, ২০২৪, ১:০০ পূর্বাহ্ণ

আজ পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ, ১৪৩১ সন। বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির এক মহান উৎসব। ধর্ম-বর্ণ, ধনি-গরিব নির্বিশেষে এক হয় সব শ্রেণির মানুষ বর্ষবরণের উৎসব-আয়োজনে সামিল হয়ে থাকেন। রঙে-আনন্দে, উচ্ছ্বলতায়, আবেগাপ্লুতায়, চিন্তা ও ভাষায় উদ্ভাসিত হয় চারদিক, আনন্দ আলোয় ভরে উঠে সারা দেশ। এই দিনে বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়, বিশ্ব মানুষে নিজেদের পরিচয় ঘোষিত হয়- শান্তি, ঐক্য, প্রেম-ভালবাসা, পরম ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দের। পহেলা বৈশাখ বিশ্ব মানবতার সমর্থনে শপথেরও দিন। বিশ্বের অন্য নববর্ষের চেয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের এখানেই পার্থক্য, চরিত্র ও বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা।
বাংলা নববর্ষ বাঙালির চেতনায়-অনুভবে ঠিকই সাহস ও শক্তি যোগাবে, যেমন যুগিয়েছে চিরদিন। অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাঙালির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেরও পথনির্দেশক নববর্ষ। সেই শপথের ইস্পাত কঠিন ঐক্য থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্পর্ধিত অভ্যুদয়। বাংলা নববর্ষের ভেতরের শক্তিকে তাই ভয় পায়- বিবরবাসী সাম্প্রদায়িক শক্তি। তাদের কাছে অত্যন্ত অপছন্দের ব্যাপার এটি। তারা আনন্দ-আলো, জ্ঞান গরিমা, সত্য ও সুন্দরকে ভয় পায়, নারীকে ভয় পায়, সর্বোপরি মানুষের মিলন-ঐক্যকে ভয় পায়।
বাংলা নববর্ষ এক অবিনাশী চেতনার প্রদীপ্ত অগ্নিশিখা। একে নেভান যায় না, যায়নি, যাবে না কোনো দিন। যারা এই আগুনকে নেভাতে চায়, তারাই বার বার পুড়ে মরেছে। আবহমানকাল ধরে এই অগ্নিধারায় স্নান করে যে বাঙলি জাতি শুচি-শুভ্র হয়েছে সে তো আগুনেরই সন্তান। সে জাতির ললাটে কলঙ্কটিকা আঁকে কার সাধ্য! তাইতো বাঙালির এই সংস্কৃতি এখন বিশ্ব ঐতিহ্যেরও অংশ হয়ে গেছে। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দিয়েছে। বাঙালির সংস্কৃতি তাই- যা বিকশিত হয় বিশ্ব ব্যাপিয়া।
নতুন বছর সকল জরা ও গ্লানি মুছে দিয়ে, সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র-আগ্রাসন রুখে দেয়ার নবতর সংগ্রামের শপথে ঐক্যবদ্ধ বাঙালির জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি ও অনাবিল আনন্দ বয়ে আনুক এটাই প্রত্যাশা।
বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ সবার জন্য শুভ হোক, কল্যাণ হোক।