বিদেশে অর্থ পাচার রোধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছারই প্রতিফলন

বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার বিষয়। এ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনাও আছে বিস্তর। সরকার বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধে আন্তরিক নয়- এমনই অভিযোগ। ঠিক এমনই আবহে অর্থ পাচার প্রতিরোধে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেই ঘোষণা আসলো। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য- প্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে ১০ দেশের সঙ্গে আইনগত সহায়তা চুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, পাচার করা অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং এবং সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদনের পর ওই কৌশলপত্রের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থায় পাঠানো হয়। এছাড়া পাচার করা অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে বি.এফ.আই.ইউ কর্তৃক ১টি গাইডলাইন্স প্রণয়ন করা হয়েছে, যা জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।’

সংবাদ মাধ্যমে তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই টাকা পাচারের ঘটনা বাড়ছে। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ থেকে যেসব চ্যানেলে টাকা বেরিয়ে গেছে এর মধ্যে বেশ কয়েকটি মূল কারণ চিহ্নিত করেছেন দেশের অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকরা। এর মাঝে পণ্য আমদানির সময় কাগজ পত্রে বেশি দাম উল্লেখ করে টাকা পাচার। আরেকটি হচ্ছে পণ্য রপ্তানি করার সময় কাগজপত্রে দাম কম দেখানো। পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমে বিশাল ১টি অংক পাচার হচ্ছে। এ ছাড়া দুর্নীতি, কালো টাকা বেড়ে যাওয়া, বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণেও অর্থ পাচার বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সংবাদ মাধ্যমের খবর, তৈরি পোশাক রপ্তানির আড়ালে ৩৩টি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের ৮২১ কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। ২০২৩ এর সেপ্টেম্বরে এ খবর দেশে আলোচনা- সমালোচনার জন্ম দেয়। খবর মতে, দেশের সবচেয়ে বড় অর্থপাচার কেলেঙ্কারির অন্যতম এই ঘটনা উদ্ঘাটন হলেও এসব পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, এসব প্রতিষ্ঠান ১৩ হাজার ৮১৭টি চালানে ৯৩৩ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করলেও দেশে এনেছে মাত্র ১১১ কোটি টাকা। বাকি ৮২১ কোটি টাকা
সিঙ্গাপুর, দুবাই, মালয়েশিয়া, কানাডাসহ ২৫টি দেশে পাচার করতে ভুয়া রপ্তানি নথি ব্যবহার করেছে প্রতারকচক্র।
দেশের অর্থ পাচারের বিষয়টি এখন আর অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। সরকার বিষয়টিকে গুরুদ্বের সাথেই দেখছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা সেই সদিচ্ছারই প্রতিফলন। প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখাই যায়। পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ১০ দেশের সঙ্গে আইনগত সহায়তা চুক্তি সম্পন্ন হবে এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।