মাটির স্বপ্নের বাড়ির প্রতিটি দেয়াল যেন উম্মুক্ত ক্যানভাস

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪, ৮:৫৪ অপরাহ্ণ


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থেকে আলপনা গ্রামের দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। যে আলপনা গ্রাম দেশ জুড়ে পরিচিত পেয়েছে বহু বছর আগেই। তবে সম্প্রতি রং-তুলির আঁচড়ে প্রত্যন্ত গ্রামের মাটির এক দুইতলা বাড়ি হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। এ বাড়ির প্রতিটি দেয়াল যেন উম্মুক্ত ক্যানভাস। এই বাড়িটি এক নজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত উৎসুক জনতা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কাজল কেশর গ্রামের এই সাধারণ বাড়িকে অসাধারণ করে তুলেন এক গৃহবধু শহিদা বেগম।

মাটির এই স্বপ্নের বাড়ির কাঁচারি ঘর, রান্নাঘর থেকে শুরু করে শোবার ঘর পর্যন্ত, প্রতিটি ঘরের দেয়াল আর মেঝেই আলপনায় ভরা। দেয়াল আর মেঝে দেওয়াল সেজেছে হাতের ছোঁয়ার-শিল্পকর্মে। তবে বাড়িটি মাটির হলেও দুইতলা।

জেলা সদর থেকে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ আর পুকুর পেরিয়ে মেঠো পথের ধারের বাড়িটিতে পৌঁছে গেলে অন্য রকম এক মুগ্ধতা পেয়ে বসবে আপনাকে।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কাদামাটির পরিচ্ছন্ন দেয়ালে তুলির আঁচড়ে শহিদা বেগম ফুটিয়ে তুলেছেন নানা ধরনের আল্পনা ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থাপনা ও দৃশ্যকে। বাড়ির বাইরের অংশ এবং অন্দর মহল সব জায়গায়
শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের আলপনা। মাটির পাতিলসহ কুটির শিল্পের নানা উপকরণ ও বাইরের অংশে লাগানো নানা লতা-গুল্ম শোভা বাড়িয়েছে বাড়িটির। তাই বাড়িটির না দেওয়া হয়েছে স্বপ্নের বাড়ি।

শহিদা বেগম বলেন, বর্তমান সময়ে মানুষ ইট-পাথরের বাড়ি বড় বড় বাড়ি বানাচ্ছেন। তবে আমাদের সেই চাহিদা নেই। আমরা মাটি দিয়ে তৈরি এই দোতলা বাড়িকেই সুন্দর করে সাজিয়েছি। এখানে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছি। এজন্য সাংসারিক খরচ থেকে বাঁচানো টাকা দিয়ে শুরু করেন বাড়ির আলপনা আঁকার কাজ। ধীরে ধীরে এমন দৃষ্টিনন্দন এক বাড়িতে রূপ নিয়েছে। এখন এই বাড়ি এখন দৃষ্টি কাড়ে পথচারীসহ আশপাশের মানুষের।

নেজামপুর ইউনিয়নের কাজল কেশর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা আজহার আলী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা ছাড়া একজন নারীর নান্দনিক কারুকার্যে বিমোহিত দর্শনার্থীরাও। এমনকি দূর-দূরান্ত থেকেও আসেন মানুষজন। তাই আজকে আরও দেখতে এসেছি। দেখে খুবই ভালো লাগল।

আসরাফুল ইসলাম নামে আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, শহিদা বেগমের বাড়ির কারণে আমাদের পুরো গ্রাম এখন অলংকরণের গ্রামে পরিণত হচ্ছে। রং আর সূক্ষ্ম কারুকাজ দৃষ্টিনন্দন করেছে একে। এটি আকৃষ্ট করে
পথচারী আর সংস্কৃতিপিপাসু মানুষকে।

এসময় মতিউর রহমান ও আসমা খাতুন নামে এক দম্পতি বলেন, আমরা রাজশাহী থেকে এসেছি বরেন্দ্র এলাকায় ঘুরতে। এসে জানতে পারলাম এখানে একটি সুন্দর দৃষ্টিনন্দন আছে। তাই দেখেত এসেছি। দেখে খুবই ভালো লাগলো।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ