রাণীনগরে চাঁদার টাকায় জাতীয় দিবস উদযাপন, উপেক্ষিত উপজেলা চেয়ারম্যান

আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২৪, ৩:০২ অপরাহ্ণ

রাণীনগরে চাঁদার টাকায় জাতীয় দিবস উদযাপন, উপেক্ষিত উপজেলা চেয়ারম্যান

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি:


নওগাঁর রাণীনগরে চাঁদা আদায়ের অর্থ দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করলো উপজেলা প্রশাসন। অপরদিকে আমন্ত্রণপত্রে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নাম না রাখায় নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এমন খামখেয়ালিপনা বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম সম্পর্কে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলাবাসীদের মাঝে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে যে, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে বাধ্যতামূলক উপজেলার সকল ইট ভাটা থেকে দশ হাজার-পনের হাজার টাকা, আবাদপুকুর হাট থেকে পনের হাজার টাকা, ত্রিমোহনী হাট থেকে পাঁচ হাজার টাকা, ঠিকাদার গ্রুপের কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা চালকল মালিক গ্রুপ, সকল বেকারী ফ্যাক্টরী, বিভিন্ন সমিতি, এনজিওসহ অন্যান্য অর্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাত থেকে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে। অপরদিকে জাতীয় দিবস উপলক্ষে ছাপানো উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণপত্রে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নাম রাখার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মনগড়া কান্ড কারবার বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।এছাড়াও অন্যান্য সম্মানী ব্যক্তিদেরও উপেক্ষিত করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার এক ইটভাটার মালিক জানান ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে ১০ হাজার টাকা আর থানা পুলিশকে ৫ হাজার করে টাকা দিতে হয়েছে। চাঁদার টাকা দিতে একটু দেরি হওয়ায় টাকা নেওয়ার জন্য বাড়িতে লোক পাঠানো হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জিম্মি। তারা যখন যে ভাবে যা বলে তা ইচ্ছে না থাকলেও করতে হয়। তা না হলে কারণ ছাড়াই আমাদেরকে নানা ভাবে হয়রানী করে থাকে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ দুলু মোবাইল ফোনে জানান আমন্ত্রণপত্রে নাম না রাখার বিষয়ে ইউএনওকে জানালে তিনি বলেন বিষয়টি তিনি দেখছেন। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নতুন করে দেখার কোন অবকাশ নেই। নিয়ম অনুসারে আমন্ত্রণপত্রে অবশ্যই সম্মানসূচক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নাম রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ইউএনও এমন কান্ড কেন করলেন তা আমার অজানা।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল মোবাইল ফোনে জানান, প্রটোকল অনুসারে যে কোন জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। কিন্তু অনুষ্ঠানে যদি স্থানীয় সাংসদ উপস্থিত থাকেন তাহলে তার সম্মানার্থে এমপি পতাকা উত্তোলন করেন আর বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। সেই নিয়মানুসারে অবশ্যই আমন্ত্রণপত্রে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নাম রাখতে হবে তানা হলে তাকে অপমানিত করা হয়।

থানার ওসি আবু ওবায়েদ মোবাইল ফোনে জানান যে জাতীয় দিবস উপলক্ষে কারো কাছ থেকে কোন প্রকারের সহযোগিতা গ্রহণ করা হয়নি। যে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি বলেছেন তিনি নিশ্চয় ভুল ও মিথ্যে বলেছেন।
এই বিষয়ে ইউএনও উম্মে তাবাসসুমের মোবাইল ফোনে ও হোয়াটসাঅ্যাপে ফোন দিলে ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ