সরকারি নির্দেশনা চাল ব্যবসায়ীরা মানেন নি

আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

সহযোগিতামূলক আচরণ নয়
সরকারি সিদ্ধান্ত মাঠ পর্যায়ে তামিল হচ্ছে না। চালের বাজারে শৃঙ্খলা আনতে পহেলা বৈশাখ, রোববার (১৪ এপ্রিল) থেকে নতুন নিয়ম চালু করতে চেয়েছিল সরকার। চালের বস্তায় ধানের জাত, দাম, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম এবং উৎপাদনের তারিখ লেখার নির্দেশনা কার্যকরের কথা আগেই জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারের এই ঘোষণা মানেননি দেশের কোনো চালকল মালিক। অথচ চালের বস্তায় বিভিন্ন তথ্য সন্নিবেশ করতে ৬৪ জেলার মিল মালিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে। তাদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চালানো হয়েছে। দুই মাস আগে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এরপরও তারা প্রস্তুত নন বলে জানিয়েছেন।

সরকারের জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের চাল উৎপাদকারী কয়েকটি জেলা পরিদর্শন করে নিশ্চিত হওয়া গেছে বাজারে একই জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চাল ভিন্ন ভিন্ন নামে ও দামে বিক্রি হচ্ছে। চালের দাম অযৌক্তিক পর্যায়ে গেলে বা হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে মিলার, পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এতে ভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে পছন্দমতো জাতের ধান, চাল কিনতে অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থার উত্তরণের লক্ষ্যে চালের বাজার মূল্য সহনশীল ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে ধানের নামেই যাতে চাল বাজারজাতকরণ করা হয় তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটরিঙের সুবিধার্থে বস্তায় এসব তথ্য লেখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।

ব্যবসায়ীরা বলেেছন, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এখনও প্রস্তুত নন চালকল মালিকরা (মিলার)। কারণ ধানের জাত লেখার বিষয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। বস্তার গায়ে দাম লেখার ক্ষেত্রেও জটিলতা রয়েছে। এলাকাভেদে দামের মধ্যে তো পার্থক্য থাকে। তাই পাইকারি বাজারের কোথাও সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক বস্তার গায়ে ধানের জাত, দাম, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম এবং উৎপাদনের তারিখ লেখা বস্তা ভর্তি চাল পাওয়া যাবে না। এর জন্য আরও সময় লাগবে।

নতুন নিয়ম চালু করলে তা বাস্তবায়নে সময়ে প্রয়োজন হয়। সরকার সে সময়ও দিয়েছে মিল মালিকদের। কিন্তু তারপরও মিলমালিকরা সাড়া দেননি। অথচ তাদের সাথে পরামর্শ করেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারপরও অসম্ভব কিছু নয় যে, নিয়ম মেনে চলতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু সেটা মালিকদের পক্ষ থেকেই সে বিষয়গুলো সরকারকে আগেই অবহিত করার প্রয়োজন ছিল। পরিপত্র বাস্তবায়নে সরকারের নির্ধারিত তারিখ অতিক্রম করার পরই মিল মালিকরা তাদের সমস্যার কথা বলছেন। এটা সরকারের সাথে মোটেও সহযোগিতামূলক আচরণ হলো না। বাজারে প্রতারণামূলক অন্যায় ব্যবস্থাও চলতে দেয়া যায় না। ব্যবসায়ীরাও সেটা মানবে কেন?

মিল মালিক বা ব্যবসায়ীরা আরো সময় চেয়েছেন, সেটা কতদিনের জন্য? সমস্যা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। শর্তগুলো ধাপে ধাপে প্রতিপালন করাও যেতে পারে। কিন্তু সবকিছুই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই করতে হবে।