সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌরুট

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

সম্ভাবনার নতুন জাগরণ

বহুল প্রত্যাশিত ভারতের মুর্শিদাবাদের সঙ্গে রাজশাহীর নৌপথে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলো। এক সময় এই পথের গুরুত্ব ছিল, দুই অঞ্চলের সাথে বাণিজ্য যোগাযোগসহ মানুষের সম্পর্কও ছিল নিবিড়। দেশ বিভাগ ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ৫৯ বছর পর আবারো বাংলাদেশে-ভারতের মধ্যে সেই যোগাযোগ, সেই সম্পর্ক স্থাপিত হলো। রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ভারতের মুর্শিদাবাদ প্রান্তে ময়া নৌবন্দরের উদ্বোধন করেন ভারতের কেন্দ্রীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। ধারণা করা হচ্ছে ঐতিহাসিক এই রুট পুনরায় চালু হওয়ায় বাণিজ্য ক্ষেত্রে দুই দেশই উপকৃত হবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন সুলতানগঞ্জ-ময়া রুটে বছরে হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে। সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের মাধ্যমে এসব পণ্য ভারত থেকে আমদানিতে সময় ও খরচ কমে যাবে। বছরে ৪ হাজার ১৩৯ ট্রিপ পণ্যবাহী কার্গো চলাচল করবে। এতে উপকৃত হবেন বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের ব্যবসায়ীরা।

সোনার দেশের খবরে বলা হয়েছে- নদীপথে সুলতানগঞ্জ থেকে ময়া নৌঘাটের দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। সুলতানগঞ্জ নৌঘাটটি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণের পদ্মার শাখা নদী মহানন্দার মোহনার কাছাকাছি। সারা বছর সুলতানগঞ্জের এই পয়েন্টে গভীর পানি থাকে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের ময়া নৌঘাটটি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমা শহরের কাছে ভারতীয় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত। ফলে সুলতানগঞ্জ-ময়া পথে নৌবাণিজ্য শুরু হওয়ায় পরিবহন খরচ অনেকাংশে কমে যাবে। এতে রাজশাহীর অর্থনীতি গতিশীল হবে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। প্রথমদিন বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস ঝুটপণ্য নিয়ে এবং ভারত থেকে পাথরবাহী কার্গো দুপুর দুইটায় সুলতানগঞ্জ বন্দরে আসে।

নৌ-রুটটি নতুন করে চালিুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তরিক উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এই নৌবন্দর চালুর মধ্য দিয়ে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত হলো। এই ভাবেই বন্ধুত্বে অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এটাই প্রত্যাশিত।

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যের সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌরুট চালুর ক্ষেত্রে রাজশাহীর কৃতী সন্তান সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামানের অসাধারণ ভূমিকা ছিল। তিনি গত কয়েক বছর ধরেই নিজ অবস্থান থেকে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তিনি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন। নৌবন্দর চালুর করার জন্য ভারত সফরও করেছেন। তাঁকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

আমরা প্রত্যাশাকে আরো গভীর ও বিস্তৃত করেই দেখতে চাই। সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌ-রুট আরো কার্যকর করে তোলার ক্ষেত্রে দুই দেশের নতুন নতুন ধারণা ও প্রযুক্তির পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন হবে। আমরা আশা করি সময় এসেছে আবারো নতুন করে গোদাগাড়ি- আমনূরা রেলপথ চালু করার। সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌ-রুট দিয়ে পণ্য পরিবহনের সাথে সাথে যাত্রী পরিবহণেরও ব্যবস্থা করা হবে। এর ফলে উভয় দেশের মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।