আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন

আপডেট: মার্চ ১৭, ২০২৪, ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু জীবনেরই স্পন্দন
শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, গৌরবময় প্রতিষ্ঠানের নাম, বাঙালি জাতির ইতিহাসের মহানায়ক এক অকুতভয় যোদ্ধার নাম। মহামানবের নাম। তিনি বঙ্গবন্ধু, তিনিই জাতির পিতা। আকাশ-বিস্তৃত হৃদয়ের একজন মানুষ, লোকনেতা। যুগের স্পর্ধিত এই মানুষটির সংগ্রামী জীবনে বাংলার মানুষের ভালবাসাই ছিল মূল উপজীব্য। বঙ্গবন্ধু এ দেশটাকে, এ দেশের মাটি ও মানুষকে খুবই ভালবাসতেন। এই ভালবাসায় ছিল না কোনো খাদ, ছিল না বাহুল্যতা।

বাঙালি জাতির স্মরণকালের সুসংগঠিত মুক্তি আন্দোলনের একচ্ছত্র নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। সময়কে তিনি শাসন করেছেন, ইচ্ছেমত চালিত করেছেন। সময় ও ঘটনা তাঁর নির্দেশ মেনেই চালিত হয়েছে, সংঘটিত হয়েছে ঘটনা। এখানেই বঙ্গবন্ধুর কৃতিত্ব, মহান গৌরবগাথা। এক বঙ্গবন্ধু সাড়ে সাত কোটি মানুষের বুকে সমান তালে স্পন্দিত হয়েছে। বিশ্বের ক’জন নেতার ভাগ্যে এমন বিরল কীর্তিগাথা অর্জন সম্ভব হয়েছে? তাই বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সমর্থক শব্দ। একটি আরেকটি থেকে পৃথক করা যায় না। সম্ভবও নয়।

জাতির পিতার ১০৪তম বার্ষিকীতে জাতি এই মুহূর্তে উদযাপন-আনন্দে মেতেছে। সরকারি- বেসরকারি এমন কী ব্যক্তি পর্যায়ে বিস্তর কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু গণমানুষের নেতা ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর জীবন ছিল অত্যন্ত সাধারণ, সাদামাটা তাঁর চলাফেরা, বসবাস, ভাব ও ভঙ্গিতে কিংবা কথা বলায় ছিল না কোনো জটিলতা, অস্পষ্টতা। সাধারণ মানুষের সাথে অব্যাহত অবিচ্ছিন্ন থেকেই তিনি মানুষের স্বপ্ন-আকাক্সক্ষাকে নিজ প্রাণে ধারণ করেছিলেন। সহায়-সম্বলহীন মানুষের হাতে সম্পদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন।

পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন, চেয়েছিলেন জনগণকেই রাষ্ট্র ক্ষমতার মূল কেন্দ্রবিন্দু করতে। বাংলার মানুষের প্রতি তাঁর বিশ্বাস, ভালবাসা ও আস্থার জায়গা থেকে এক চুল নড়েননি, এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকি মাথায় নিয়েও। তাইতো মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানের কারাগারে যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নীলনকশা তৈরি হচ্ছিল। তাঁর লাশ দাফনের জন্য কবর পর্যন্ত খোঁড়া হয়েছিল। তখনও বঙ্গবন্ধুর কাছে বাংলার মানুষের ভালবাসাই শক্তি ও সাহসের অবলম্বন ছিল।

তিনি পাকিস্তানি স্বৈরশাসককে বলেছিলেন, ‘আমাকে হত্যা কর কিন্তু আমার লাশ বাংলার মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিও।’
বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে মুক্ত করেছেন সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শোষণের নাগপাশ থেকে। আপামর জনসাধারণের আশা-আকাক্সক্ষা, বেদনা-বিক্ষোভ সর্বোপরি আবহমান বাংলার বৈশিষ্ট্যকে তিনি নিজের জীবনে আত্মস্থ করেছেন।

জাতি হিসেবে আমরা এখনো বঙ্গবন্ধুকে খুব সামান্যই আত্মস্থ করতে পেরেছি। তিনি নেই, অথচ আছেন মাটি ও মানুষের সর্বত্র ব্যাপিয়া। তিনি মানবতার বাতিঘর হয়ে জাতিকে পথ দেখাচ্ছেন, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু থেকেই জাতি নির্বাণ লাভ করতে থাকবে। বাঙালি যখনই ক্লান্ত-অবসাদ আর সঙ্কটে ভুগবে, বঙ্গবন্ধু তখনও শক্তি ও সাহসে বেঁচে থাকার মন্ত্রণা দিবেন জাতিকে। তিনি জাতির সত্তায় অষ্টেপৃষ্ট জুড়েÑ তাঁকে বাদ দিলে পশুত্বেরই জয় হয়।

বঙ্গবন্ধু মানে ভালবাসা, সৌন্দর্য-সম্ভ্রম, বঙ্গবন্ধু মানে উজ্জীবিত মানবতা, মানবের মঙ্গল। বঙ্গবন্ধু মানে সহজবোধ ও বিশ্বাস, আকাক্সক্ষার সহজ অভিভাষণ। বঙ্গবন্ধু জীবনেরই স্পন্দন।

মহামানবের জন্মদিনে সোনার দেশের পাঠক, শুভানুধ্যায়ী ও বিজ্ঞাপনদাতাদের জানাই শুভেচ্ছা।
জয়তু বঙ্গবন্ধু।