কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

সভ্যতার জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন নতুন প্রযুক্তি-উদ্ভাবন একদিকে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপকতর ভূমিকা রাখছে, তেমনি সামাজিক অবক্ষয়িত কিছু উপাদান রাষ্ট্র-সমাজকে দারুণভাবে বিষিয়ে তুলছে। নতুন ধরনের অপরাধ-সমষ্টিরও জন্ম হচ্ছে। নেতিবাচক উপজাতগুলো সমাজ-রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। এগুলো নিয়ে নানাভাবে আলোচনা-পর্যালোচনা হচ্ছে, সমাধানে নানা উদ্যোগ ও নিয়ন্ত্রণের তাগিদও আসছে। কিন্তু সেই চিন্তার রেশ না কাটতে নতুন সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান সমস্যা কি এক সময় সভ্যতার চালিকা শক্তিকেই কি রুদ্ধ করে দিবে? এ আশংকা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায় না।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের ব্যবহার যেমন সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলছে তেমনি মনুষ্য সমাজের জন্য এমন সব ঝুঁকি তৈরি করছে যা মানুষের জন্য প্রশমনযোগ্য হবে কী না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির দিন দিন বেড়েই চলেছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এ উদীয়মান প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও গবেষণা। তবে এআই নিয়ন্ত্রণ করা যায় বা এর ব্যবহার নিরাপদ-এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। এখানেই বিপদ দেখছেন গবেষকরা। সম্প্রতি ‘ইউনিভার্সিটি অফ লুয়িভিল’-এর রুশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী রোমান ভি ইয়ামপোলস্কি দাবি করেছেন, এআই-এর ওপর আংশিক নিয়ন্ত্রণও এআইকে সমাজের নতুন আকার দেয়া থেকে মানুষকে নিরাপদ রাখতে যথেষ্ট হবে না। বরং এতে আরো খারাপ কিছুও হতে পারে।

ইয়ামপোলস্কির যুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেন মানুষকে ঝুঁকিতে না ফেলে সেটা নিশ্চিত করতে এ প্রযুক্তির সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
ইয়ামপোলস্কি বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি নিশ্চিত ঘটনার সামনে এগিয়ে যাচ্ছি যা আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অনেকে যে এআইকে মানবতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসাবে বিবেচনা করছেন, সেটিও অবাক করার মতো বিষয় নয়। এর ফলাফল হতে পারে সমৃদ্ধি অথবা বিলুপ্তি এবং এখানে মহাবিশ্বের ভাগ্যের ভারসাম্য ঝুলে আছে।’

ইয়ামপোলস্কি বলেছেন ‘আমরা যদি ব্যাখ্যা ছাড়াই এআইয়ের বিভিন্ন জবাব গ্রহণ করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি এবং এআইকে যদি একটি ‘ওরাকল সিস্টেম’ হিসাবে বিবেচনা করা যায়, তবে আমরা এটা বুঝতে পারব না যে এটি ভুল জবাব দিচ্ছে কি না।’

মোটের ওপর এআই প্রযুক্তি নিয়ে সতর্কতার সাথে এগোনেরই কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিযোগিতার যুগে সেটা আদৌ সম্ভব কী না তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। আর এটা এমন একটি বিষয় যে কোনো একক দেশের জন্য নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ ব্যাপার। বিশ্বজনিন ঐকমত্য ছাড়া এআই-এর মত দুর্বিণীত প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কথা বিবেচনা করে সরকার আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই বিষয়ক একটি আইন প্রণয়ন করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক বৈঠকে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেছেন। বিশ্বব্যাপি তথ্য প্রবাহের অবাধ প্রবাহ বহাল রেখে আইন করে এর বাইরে দাঁড়ানোও কঠিন হবে। প্রতিযোগিতার যুগে পিছিয়ে পড়াও অসম্ভব কিছু নয়। বিষয়টি বিশ্বের চোখ দিয়ে দেখতে হবে বিশ্ব নেতাদের। তাতে মানব জাতিরই কল্যাণ হবে।