ক্যান্সার আক্রান্ত কলেজ ছাত্র সিজান বাঁচতে চায়

আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৪, ৯:০৭ অপরাহ্ণ


ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:শিশুকালে বাবাকে হারিয়ে ঈশ্বরদী শহরের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সামনে ঝালমুড়ি, বিস্কুট, চিপ্স বিক্রি করে নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সিজানুর রহমান সিজান এখন পাকশী রেলওয়ে কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। তার মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। কলেজে পড়ালেখা করার পাশাপাশি সিজান ঝালমুড়ি, বিস্কুট, চিপস বিক্রি করে সংসারে সহযোগিতা করে কষ্টের মাঝে আনন্দেই কাটাচ্ছিল তার জীবন।

স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করে মায়ের মুখে হাসি ফোটাবার। কিন্তু এই বয়সে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে না পারছে তার মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে না পারছে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে। কলেজ ছেড়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনতে হচ্ছে তাকে। জানা গেছে, গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করে পাকশী রেলওয়ে ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পর জ্বরসহ টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয় সিজান। চিকিৎসক তার শরীরে ৮টি ইনজেকশন দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন কিন্তু টাকার অভাবে ৫টির বেশি ইনজেকশন দেওয়া সম্ভব হয়নি।

কিছুদিন পর ফের অসুস্থ্য হলে পরীক্ষা নীরিক্ষার পর জটিল সমস্যা ক্যান্সার আক্রান্ত ধরা পড়ে তার শরিরে। সিজানকে প্রথমে রাজশাহী ও পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলে তার শরিরে ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত ধরা পড়ে, একই সাথে শরিরে রক্ত উৎপাদন ক্ষমতাও হারিয়ে যায়।

ক্যান্সার আক্রান্ত সিজানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪র্থ তলার হেমোটোলোজি বিভাগের ৫৬নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার সিজানকে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার রক্তের আরও ৩ টি পরীক্ষা শেষে আগামী মঙ্গলবার থেকে কেমোথেরাপি দেওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের হেমোটোলোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মুর্শেদুজ্জামান জানান, এ রোগের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। প্রাথমিকভাবে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার প্রয়োজন হতে পারে। এর পরেও সুস্থ্য হওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার।

ক্যান্সার আক্রান্ত সিজানের সহপাঠি জিসান বলেন সিজান ছোটবেলা থেকেই অনেক চুপচাপ শান্ত প্রকৃতির। কারও সাথে ও কখনো ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হতো না। সিজানের শিক্ষক মাসুদুল ইসলাম মাসুদ বলেন ও ছোট বেলা থেকেই মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত, ওর এমন কঠিন রোগ হয়েছে ভাবতেই পারছি না।

ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় ইদগাহ রোড তছের পাড়ার মৃত আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী ও ক্যান্সার আক্রান্ত সিজানের মা পারুল বেগম বলেন, মাত্র ১৮ বছর বয়সী এমন সুস্থ সবল হাসিখুশি আমার ছেলেটির এমন মরণব্যাধি হয়েছে আমার বিশ্বাস হয় না। আমি মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করি, কিভাবে এই ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসা করাবো। এই অবস্থায় তিনি সমাজের বিত্তবানদের নিকট আকুতি জানিয়ে তার সন্তানকে বাঁচানোর জন্য সাহায্য করবার জন্য অনুরোধ করেছেন। বিকাশ ও রকেট নাম্বার ০১৭১৯৩০৯৬৫৬ এবং সোনালী ব্যাংক ঈশ্বরদী শাখার ৪১১১১০১০২১০৭৪ নম্বর হিসাবে সাহায্য পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন অসহায় মা পারুল বেগম।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ