প্রধানমন্ত্রীকে জো বাইডেনের চিঠি

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচনবিরোধীরা বলবে কী!:

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৪ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ চিঠি পৌঁছে দিয়েছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এ সম্পর্কিত খবর দেশের সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীকে জো বাইডেনের এ চিঠি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গণে বেশ আলোচনা-পর্যালোচনা হচ্ছে। এটা হওয়াটাও সঙ্গত এ কারণে যে, শেষ পর্যন্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি আছে। তদুপরি দেশটি বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করতে চায়। প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার চিঠিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্যকে সমর্থন করতে এবং একটি উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমাদের যৌথ ভিশনে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদরিত্ব করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রীকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট চিঠিতে এও উল্লেখ করেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশিদারত্বের পরবর্তী অধ্যায় শুরুর এ সময় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জ্বালানি, বৈশ্বিক বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমার প্রশাসনের আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করতে চাই।’ বাংলাদেশ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের পরিস্কার অবস্থান। বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দেশের বিরোধী শিবিরে যে জল্পনা-কল্পনা বা প্রত্যাশা ছিল তার আপাত অবসান হলো প্রধানমন্ত্রীকে লেখা বাইডেদের চিঠির মাধ্যমে।

এখন বিএনপি ও দলটির মিত্রদের কেমন অবস্থান হয়- সেটাই দেখার বিষয়। বিএনপি এখনও কি মনে করবে যে, বিদেশি শক্তি তাদের ব্যাপারে কিছু একটা করবে যা তাদের ক্ষমতা যাওয়ার পথকে প্রশ্বস্ত করবে? এ কারণেই একটি রাজনৈতিক দলকে জনগণের হয়ে টিকে থাকার জন্য সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলকে ভবিষ্যতমুখিনতা এবং সেইমত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা অবশ্যই অর্জন করতে হবে।

সময়ের প্রতি অবহেলা- উদাসীনতা প্রকাশ হতে থাকলে দলে কর্মিসমর্থক যতই বেশি থাকুক না কেন দলটি ক্ষয়িষ্ণু হতে বাধ্য। শুধু বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে একটি রাজনৈতিক দল টিকে থাকতে পারে না। জাতীয় ও বিশ্ব রাজনীতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই রাজনৈতিক কৌশল ঠিক করতে হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্রে আগের সেই অবস্থানে নেই। ইরানের মত একটি দেশ আমেরিকার চোখে চোখ রেখে কথা বলে। যুক্তরাষ্ট্রকে এখন অনেক হিসাব-নিকেশ করেই এগোতে হয়।

এমন বিশ্ব পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে কিংবা মুশকিল আশান হয়ে যাবে এমন চিন্তা করাটা বোকামিই বটে। আর এটি সব সময়ের জন্য প্রযোজ্য যে, দেশের মানুষকেই প্রথম এবং শেষ পর্যন্ত প্রথম অবলম্বন করতে হয়। রাজনীতিতে এর অন্যথা করার কোনো সুযোগ নেই। স্বাভাবিকভাবেই দ্বাদশ নির্বাচনের আগে মার্কিন নীতি যা ছিল তা নির্বাচনের পর ওই নীতি আবশ্যকতাও নেই। এই কারণে যে, আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে। ভূ-রাজনৈতিক কারণেই যুক্তরাষ্ট্রকে বর্তমান সরকারের সাথে কাজ করতেই হবে। এই বাস্তবতা কারো জন্য না বোঝার কথা নয়। সময়ের সাথে চলাটাও সময়েরই একটি দায়। রাজনীতিতে এটাও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে শিখন-পাঠও আছে।