দেশে বছরে ৪৪ শতাংশ ফল ও কৃষিপণ্য নষ্ট হয়

আপডেট: মার্চ ১১, ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ মেয়াদে সংরক্ষণে হিমাগার স্থাপন জরুরী

বাংলাদেশে ৪০৩টি হিমাগার রয়েছে। আরও নতুন করে হিমাগর তৈরি হচ্ছে। এরপরও সংরক্ষণের সুব্যবস্থা নেই বলে দেশে প্রত্যেক বছর যে ফল ও কৃষিপণ্য উৎপাদিত হয় তার ৪৪ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। এতে প্রত্যেক বছর ক্ষতি হচ্ছে ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ফলে বেশি দামে খাদ্যপণ্য কিনতে হচ্ছে দেশবাসীকে। আগারগাঁওয়ের বিনিয়োগ ভবনে ‘কোল্ড চেইন ইনভেস্টমেন্ট কনফারেন্স ২০২৪’ শীর্ষক বিনিয়োগ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বক্তারা। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়শনের তথ্য জানাচ্ছে, দেশে ৪০৩টি হিমাগার রয়েছে। নতুন করে আরও কিছু হিমাগার তৈরি হচ্ছে। তবে অনেক সময় হিমাগার বন্ধ হয়ে যেতেও শোনা যায়।

হিমাগারগুলোতে চাহিদামতো অ্যামোনিয়া গ্যাস সরবরাহ করা হয় না ও বিদ্যুৎও থাকে না, তখন এগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। দেশের হিমাগারগুলোতে বছরে তিন থেকে চার হাজার সিলিন্ডার অ্যামোনিয়া গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। আর এই গ্যাস হিমাগারগুলোতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পাবেÑএমন নিয়মই বেঁধে দিয়েছিল শিল্প মন্ত্রণালয়। কিন্তু নানা কারণে এই গ্যাস সরকরাহ বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ আছে। দেশে কৃষি খাতে যে হারে উন্নতি হয়েছে, সে হারে শস্য সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। সংরক্ষণ করে রাখার মতো যথেষ্ট হিমাগার না থাকার কারণে অপচয় হয় অনেক শস্য।

কিছু হিমাগার থাকলেও বিদ্যুৎবিভ্রাট ও পরিমান মতো জায়গার অভাবেও পণ্য সংরক্ষণ করা যায় না। হিমাগার স্থাপনে যে সব বাধা রয়েছে তা নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। বাধাগুলো দূর করে হিমাগার স্থাপনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রত্যেক বছর দেশে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য নষ্ট হচ্ছে। চেইন হিমাগার তৈরি করে যদি তা রক্ষা করা যেত তাহলে প্রতিবছর বিপুল কৃষি পণ্য নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি দেশের রফতানি বৈচিত্র্য বাড়বে বলে মনে করেন অনেকে। দেশে যে কয়েকটি হিমাগার রয়েছে, সেগুলোও যদি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায় তাহলে চাহিদা কিছুটা মেটানো সম্ভব হতে পারে।

এক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। হিমাগারগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামোনিয়া গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হরতে হবে। পাশাপাশি নতুন হিমাগার স্থাপনে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বরেন্দ্র অঞ্চলে অনেক সময় দেখা যায় আম, টমেটোসহ বিভিন্ন ফল ও কৃষিপণ্য অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এতে করে কৃষক অনেক সময় কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। ফলে নায্যমূল্যে পায় না। তবে রাজশাহীতে ফল ও কৃষি পণ্যের জন্য আলাদা তেমন হিমাগার নেই। তাই র্দীঘ মেয়াদি সংরক্ষণ করার সুযোগ নেই। তাই ফল ও কৃষি পণ্যে সংরক্ষণের জন্য রাজশাহীতেও হিমাগার স্থাপন করার উদ্যোগ নিতে হবে।