‘বাড়ি ও যানবাহনে কালো পতাকা তোলার নির্দেশ’

আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৪, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:১০ মার্চ, ১৯৭১: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্দেশিত নব পর্যায়ের কর্মসূচির আজ ছিল তৃতীয় দিন এবং পূর্ব বাংলার সার্বিক স্বাধিকার সংগ্রামের দশম দিন।
বঙ্গবন্ধু মুজিব এদিন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জাতিসংঘ সেক্রেটারি জেনারেল উথান্ট জাতিসংঘ কর্মচারীদের ঢাকা থেকে অপসারণের অনুমতি দিয়েছেন এবং এতে করে বাংলাদেশে বসবাসকারীদের জানমাল যে পাকিস্তান সামরিক কর্তৃপক্ষ বিপণ্ন করে তুলেছে তা তিনি স্বীকার করে নিলেন।’ বঙ্গবন্ধু উথান্টকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, ‘প্রকৃত অর্থে তাঁর অনুধাবন করা উচিৎ ছিল যে, শুধুমাত্র জাতিসংঘ কর্মচারীদের সরিয়ে নিলেই তার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। কারণ আজকে যে হুমকি দেখা দিয়েছে তা গণহত্যার হুমকি। জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী স্বীকৃত বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষের মৌলিক অধিকার হরণের হুমকি।’

বঙ্গবন্ধু দৃঢ়তার সাথে বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ মুক্তির লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার এবং স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাসের অধিকার আদায়ের জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। বাংলাদেশের জনগণ জানেন যে ইতিহাস তাদের পক্ষে রয়েছে ও ধ্বংসকারী অস্ত্র যতই সংগ্রহ করা হক না কোনো শক্তিই তাদের চূড়ান্ত বিজয় রুখতে পারবেনা।’

এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান করাচির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি ঢাকা অবস্থানকালে বঙ্গবন্ধুর সাথে তিন দফা বৈঠকে মিলিত হন। এক প্রেস ব্রিফিঙে তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব সঠিক ও ন্যায্য ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তার পক্ষে অন্য কোনো ভূমিকা নেয়া সম্ভব নয়।’

এদিন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, বাঙালি সৈন্য, ইপিআর, পুলিশ, আইবি ও সিআইডি পুলিশকে পাকিস্তানি প্রশাসনের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করার নোটিশ জারি করে। নেতৃবৃন্দ সকল বাড়ি ও যানবাহনে কালো পতাকা তোলার নির্দেশ দেন।

রাজশাহীতে সান্ধ্য আইনজনিত ঘটনা সরেজমিনে তদন্তের জন্য বঙ্গবন্ধুর নির্দেশক্রমে জনাব এএইচএম কামারুজ্জামান ঢাকা থেকে রাজশাহী আসেন।
এদিন সেনাবাহিনীর ট্রাকের ওপর বিক্ষুব্ধ জনগণের প্রতিশোধমূলক হামলার খবর ঢাকায় এসে পৌঁছে। সেনাবাহিনী এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য জনগণকে সতর্ক করে দেয়। এ সময়ে পাকিস্তানি জেনারেল টিক্কা খান চট্টগ্রামে এলেন এম.ডি সোয়াত থেকে অস্ত্র খালাসের জন্য। এদিন পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভূট্টো মন্তব্য করেন যে, ‘সমগ্র পশ্চিম পাকিস্তানের হয়ে তার কথা বলার অধিকার আছে।’
এদিন নারায়ণগঞ্জ কারাগার ভেঙে ২২৩ জন কয়েদি ও ৪০ জন হাজতি পালিয়ে যায়। কারারক্ষীরা গুলি চালালে ১ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়। আজ পিআইএ’র কোনো আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলেনি।