গাছে গাছে লিচু-মুকুলের সমারোহ, বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা

আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৪, ৪:৪২ অপরাহ্ণ


শাহীন রহমান, পাবনা :গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ। মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা চারপাশ। মুকুলে মৌমাছিদের আনাগোনায় সৃষ্টি হয়েছে অন্যরকম সৌন্দর্য। লিচু চাষিদের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। পর্যাপ্ত মুকুল আসায় বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচুচাষিরা।
এ চিত্র ‘লিচুর রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত উত্তরের জেলা পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আওতাপাড়া গ্রামের লিচু বাগানের। এই জেলার সুস্বাদু আর রসালো লিচুর সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) পাবনা সদর ও ঈশ্বরদী উপজেলার বেশকিছু লিচুবাগান সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মুকুলে মুকুলে ছেয়ে আছে লিচুর বাগান। মুকুলে মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়েছে। সেই গন্ধে ছুটে আসছে মৌমাছিরা। আশায় বুক বেঁধেছেন লিচু চাষীরা।

জেলার সদর উপজেলা ছাড়াও ঈশ্বরদীর সিলিমপুর, সাহাপুর, রূপপুর, আওতাপাড়া, জয়নগর, চর রূপপুর, তিনগাছা, বাঁশেরবাদাসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে লিচু আবাদ হয়ে আসছে। এখানকার উৎপাদিত লিচু চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে।

অধিকাংশ বাগানে থোকায় থোকায় ফওটে আছে লিচুর মুকুল। বর্তমানে পানি, সার, কীটনাশক স্প্রেসহ পরিচর্যায় ব্যস্ত লিচু চাষীরা। গতবছরের তুলনায় এবার মুকুল বেশি হওয়ায় আশায় ভাল ফলন ও দাম পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা।

লিচুর বাগান পরিচর্যারত আওতাপাড়া গ্রামের লিচুচাষী জসিম উদ্দিন জানান, ‘গতবছর দেড় বিঘা জমির লিচু গাছ থেকে লিচু বিক্রি করেছিলাম তিন লাখ টাকা। এবার যেমন মুকুল দেখছি তাতে ফলন বেশি হবে।’
আরেক চাষী ফয়েজ প্রামানিক বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবছর অনেক বেশি মুকুল দেখতে পাচ্ছি। আমরাও খুব আশাবাদি, এবার ফলন আরো ভাল হবে। গত বছরের শেষের দিকে খরায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। এবার লাভবান হবো বলে আশা করছি।’

সাহাপুর গ্রামের লিচু চাষী শহিদ আলী বলেন, ‘লিচুর ফলন নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপর। এবার এখন পর্যন্ত যেমন আবহাওয়া দেখছি, তেমন বজায় থাকলে এবার বাম্পার ফলন হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এখন বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি।’

এবার লিচুর ভাল ফলন আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগও। পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘সবজি বা পেঁয়াজ ছাড়াও পাবনা জেলা লিচুর জন্য সারাদেশে বিখ্যাত। এবার গাছে প্রচুর মুকুল দেখা যাচ্ছে। লিচু চাষিদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় কাজ করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গতবছরের তুলনায় বেশি লাভবান হবেন চাষীরা।’

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর পাবনায় ৪ হাজার ৭২১ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৭৮ মেট্রিকটন। টাকার অংকে প্রায় ছয়শ’ কোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।