সেফগার্ড পলিসি সংশোধনের মাধ্যমে মুনাফার বদলে মানুষ এবং পৃথিবীকে সুরক্ষিত করার দাবী

আপডেট: এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১০:৪৭ অপরাহ্ণ

সেফগার্ড পলিসি সংশোধনের মাধ্যমে মুনাফার বদলে মানুষ এবং পৃথিবীকে সুরক্ষিত করার দাবী

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:


তিনটি পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন পরিবর্তন, উপকূলীয় জীবনযাত্রা এবং পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি) এর একটি ভিন্নধর্মী জোট, সুশীল সমাজের সদস্যবৃন্দ এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে একটি প্রতিবাদী প্রতিকী প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সুরক্ষা নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে রাজশাহীতে এই প্রচারাভিযান আয়জন করা হয়।

“প্রোটেক্ট পিপল অ্যান্ড প্ল্যানেট ওভার প্রফিট” শিরোনামের এই ক্যাম্পেইনটির লক্ষ্য এডিবি’র সুরক্ষা কাঠামোর ঘাটতি এবং ত্রুটিগুলির উপর যুক্তিযুক্ত সমালোচনায় আলোকপাত করা এবং বৃহৎ আকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে যে আক্রান্ত জনগোষ্ঠির অধিকার এবং পরিবেশকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে তা সকলের সামনে তুলে ধরা।

এই অভিনব প্রতিকী প্রচারাভিযানের মাধ্যমে, জলবায়ু কর্মীরা দাবি করেন যে, “এডিবি-এর সুরক্ষা নীতি ‘জেন্ডার, পরিবেশ এবং জীবনজীবিকা’ এর জন্য হুমকিস্বরূপ। এডিবি জীবাশ্ম গ্যাস এবং অন্যান্য ভুয়া প্রযুক্তির সমাধানে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখছে। তাই পরিবেশগত ও সামাজিক সুরক্ষা, শ্রমের মান এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত জ্বালানি রূপান্তর নিশ্চিত করতে হবে।”

সমালোচকরা দাবী করেন যে, “এডিবি-এর সুরক্ষা নীতি আন্তর্জাতিক পরিবেশ রক্ষার জন্য যে নিয়ম বা পদ্ধতি মানা হয় তেমন মান সম্পন্ন নয় কারণ এটি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে সম্মতি দেয়।” তারা আরো বলেন, “এই প্রতিবাদী কর্মসূচীটি মূলত আয়োজন করা হয়েছে এডিবি ও এর প্রকল্প অংশীদারদের অর্থায়নের ফলে সৃষ্ট যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশগত বা সামাজিক প্রভাবে তাদের দায়বদ্ধতাকে তুলে ধরা এবং শক্তিশালী জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য।”

২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে, এডিবি জ্বালানিতে প্রায় ১২ বিলিয়ন ইউএস ডলার বিনিয়োগের জন্য নির্দেশ দিয়েছে, যা আপাত দৃষ্টিতে এই অঞ্চল জুড়ে ৪৫ মিলিয়নেরও বেশি পরিবারকে উপকৃত করেছে। এডিবি বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক সহায়তার একটি মূল উৎস, যা ২০১৬ সাল থেকে প্রতি বছর গড়ে ২ বিলিয়ন ইউএস ডলার প্রদান করে। এই প্রচারাভিযানের লক্ষ্য হল এডিবিকে তার সুরক্ষা নীতির সংস্কার এবং সাধারণ জনগোষ্ঠী ও পরিবেশের অধিকার ও কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য এর নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

প্রচারাভিযান অনুষ্ঠানে মন্তব্য করতে গিয়ে ডপস-এর মুখপাত্র রাশেদ রিপন দাবি করেন, “এডিবি কর্তৃক গৃহীত সুরক্ষা নীতির ফলে সারা বিশ্বের জেন্ডার, পরিবেশ, জীবন জীবিকা, মানবাধিকার আজ হুমকির মুখে। সুরক্ষা নীতি দ্বারা মানবতাকেই সমাহিত করা হয়েছে।” সুশীল সমাজের একজন সদস্য উল্লেখ করেন যে , “এডিবি’র বিদ্যমান সুরক্ষা নীতির লক্ষ্য হওয়া উচিত ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষা করা।” তিনি অবিলম্বে শক্তিশালী সুরক্ষা নীতি গ্রহণের জন্য এডিবিকে আহ্বান জানিয়েছেন। প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা যুক্তি দেখান যে মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও পরিবেশ রক্ষায় যে প্রতিকূলতাগুলোর মুখোমুখী হতে হয় সেগুলোকে উপেক্ষা করে একটি সত্যিকারের প্রগতিশীল স্বচ্ছ সুরক্ষা নীতি হতে পারে না।

“সাধারণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা এবং মুনাফা নয়, পৃথিবী এবং মানুষকে রক্ষা করো” শীর্ষক প্রচারাভিযানটি এডিবির সুরক্ষা নীতিকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উন্নয়নের জন্য আরও ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই জ্বালানি রূপান্তরের পক্ষে একটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলাদেশের রাজশাহী অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ প্রচারাভিযানটি বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত আন্দোলনের একটি অংশ যা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সুরক্ষা নীতিকে চ্যালেঞ্জ করছে এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে শক্তিশালী পরিবেশগত এবং সামাজিক সুরক্ষার জন্য দাবী জানিয়ে যাচ্ছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ