হেমাঙ্গ বিশ্বাসের প্রয়াণ দিবস আজ

আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২৩, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


গণসঙ্গীতের কারিগর হেমাঙ্গ বিশ্বাসের মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৯৮৭ সালের ২২ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি গাজীর গান, ধামাইল গান, বাইদ্যার গান, কবি গান, হোরি গানসহ নানা রাগের সুরকে আত্মস্থ করে গেয়েছেন অনেক গান।

স্বাধিকার প্রতিষ্ঠায় আমৃত্যু সংগ্রামী এই মানুষটি ১৯১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তবে আজন্ম সংগ্রামী এ মানুষটির কথা ভুলতে বসেছেন এলাকাবাসী। এমনকি জন্মভিটাও হয়ে গেছে বেদখল।

ছোটবেলা থেকে হেমাঙ্গ বিশ্বাস কৃষক পরিবারে বেড়ে উঠেন। কলেজ জীবন জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা আন্দোলনে। কারাবরণ করেন বেশ কয়েক বার। আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেন গণসঙ্গীত।

লোকসঙ্গীতকে কেন্দ্র করে তার গণসঙ্গীত ক্রমেই উজ্জীবিত করে সাধারণ মানুষকে। নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে নেমে তাকে বিসর্জন দিতে হয় জমিদারি। এমনকি অভিভাবকরা তাকে ঘর থেকেও বের করে দেয়। তিনি আরাম আয়েশ ছেড়ে নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোকেই ব্রত হিসাবে নেন।

লোকসঙ্গীত কেন্দ্রিক গণসঙ্গীত সৃষ্টির অনন্য এ কারিগর অনুবাদে, লোকসুরের ব্যবহারে, সুর সংযোজনার দক্ষতায় বাংলা গণনাট্য সঙ্গীতে এক নতুন ধারার সৃষ্টি করেন।
তেলেঙ্গানা আন্দোলনে তাঁর গান ‘তোমার কাস্তেটারে দিও শান/ কিষাণ ভাই তোর সোনার ধানে বর্গী নামে…’ প্রভৃতি আসাম ও বাংলায় সাড়া ফেলে দেয়। পঞ্চাশের দশকে তাঁর গান দেশবিভাগের যন্ত্রণার পাশাপাশি সংগ্রামের কঠিন শপথে উদ্দীপ্ত হওয়ার প্রেরণা যোগায়।

হেমাঙ্গ কলকাতায় বসবাস করলেও ভুলতে পারেননি দেশকে, দেশের মাটি ও মানুষকে। লিখেন, ‘হবিগঞ্জের জালালি কইতর, সুনামগঞ্জে কোরা’।
১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনে তিনি লিখলেন ‘শোন দেশের ভাই-ভগিনী শোন আচানক কাহিনী, কাঁদো বাংলা জননী…’। ১৯৬৫ খ্রীস্টাব্দে অনুবাদ করেন ‘আমরা করবো জয়…’ মার্কিন লোকসঙ্গীত শিল্পী পিট সিগারের গাওয়া সেই জনপ্রিয় গানটি। ১৯৬৪-তে পারমাণবিক যুদ্ধের প্রতিবাদে রচনা করেন শঙ্খচিল গানটি। এরকম অসংখ্য কালজয়ী গান তিনি রচনা করেছেন।